সর্বশেষঃ

মধ্যরাত : পর্ব-২৪৩

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : তবু মানুষ বেঁচে থাকে, বাঁচতে চায়। গড়ে তুলে প্রেম ও ভালবাসার তাজমহল। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন- একথা জানিতে তুমি ভারত ইশ্বর শাজাহান, কাল ¯্রােত ভেসে যায় জীবন যৌবন ধনমান, শুধু তব একবিন্দু নয়নের জল, কালের কপোল তলে শুভ্র সমুজ্জ্বল এই তাজমহল, আমি বিশ্ব কবি ন ইবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও নই, সামান্য একজন মানুষ, সামান্য কথা জানি।
তখন অনেক সন্ধ্যা হয়ে আসছিল। অসংখ্য সোনার বুটির মত তারা যেন প্রাণ খুলে হাসছিল। হেমন্তের কুয়াশা ঝরা রাত, সবুজ সুন্দর গাছগুলি ন্যাঁড়া হয়ে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। অসংখ্য ঠান্ডা, হাত-পা যেন জমে আসছে। গাছের পাতা ঝরে ঝরে গাছের নীচে জমে স্তুপ হয়ে আছে। প্রচন্ড বৃষ্টির দাপটে রাস্তা ঘাট পিচ্ছিল হয়ে আছে, এখন বরফ পড়তে মনে হয় মাস খানেক দেরী হবে। তাই এত শীত, হাড় কাঁপানো শীত। এবার নাকি আবার শীত আগেই এসে গিয়েছে। এদেশের লোকের মুখে শোনা কথা। পথ দিয়ে হাজারো রকমের গাড়ী যাচ্ছে, আসছে, শতকরা ষাট জনের গাড়ী আছে। এসব ধনীদের দেশ, পথে ঘাটে কোন গরীব লোক নেই। দামী দামী গাড়ী, দামী দামী পোষাকের মানুষ।
এসব ধনীরা আমাদের হাঁসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযোগের কি বুঝবে ? কি জানবে ? ওরা বলে বাংলাদেশ গরীব, ফকিরের দেশ। আমরা গরীব স্বীকার করি, কিন্তু আমরা এদেশে এসে কাজ করে পয়সা রোজগার করি। তাই বলে হাত পেতে ভিক্ষা করতে আসিনি। ভিক্ষা করিওনা। আমার দেশের মা-বোনেরা বিয়ে করে নীড় বাঁধে। সুখে হোক, দুঃখে হোক ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার গড়ে। আর এসব ধনীর দেশের লোকেরা আজ বিয়ে করে কালই ভেঙ্গে দিয়ে, আর একজনকে নিয়ে রোমাঞ্চ করে বেড়ায়। বিয়ে নামক জিনিষটা এদের কাছে একটা ক্ষনিকের আতজ বজির মত। আমার দেশের লোকের একটা আদর্শ আছে, বা ডিসিপ্লিন আছে বা মা বোনদের একটা ত্যাগ তিতিক্ষা, মহত্ত, স্বামীর প্রতি বিশ্বাস ও অগাধ ভালবাসা আছে। এমনি নানা কথা ভাবতে ভাবতে রাত অনেক হতে চলল। বুক শেলফ থেকে টান মেরে নেহরুর জীবনিটা বের করলাম, মহাত্মা গান্ধীর জীবনটাও দেখলাম বঙ্গবন্ধুর জীবনিটাও লক্ষ প্রাণের বিনিময় বই বের করে পৃষ্ঠাগুলু উল্টে পাল্টে দেখে আমার যেন প্রাণে শান্তি এল। দেশের এসব কৃতি সন্তানদের দেখে পড়ে, বুকটা গর্বে আনন্দে ফুলে উঠল। কোথায় নেহরু গান্ধী, শেখ মুজিব, ইন্দিরা গান্ধী, দেশের জন্য; দশের জন্য স্বামী-ছেলে-মেয়ে এবং সংসার প্রতিপালন করেও নিজের দেশকে ভালবেসে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।