লালমোহনে আলুর বাম্পার ফলন, হাঁসি কৃষকের মুখে

জাহিদ দুলাল

ভোলার লালমোহন উপজেলায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজার দাম কিছুটা কম হলেও ভালো ফলন পেয়ে খুশি কৃষকরা। উৎপাদন খরচ বাদদিয়ে লাভবান হতে পারবেন বলে আশাবাদি কৃষকরা। আলুর সন্তোষজনক ফলন পেয়ে কৃষকদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে আলু তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ আবার বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষকরা জানালেন, ঘূর্নিঝড় জাওয়াদের কারনে সৃষ্ট প্রকৃতিক দুর্যোগে আলু আবাদে শুরুতে আলুর ফলন নিয়ে চিন্তিত ছিলেন লালমোহনের আলু চাষীরা। তবে সেই দুর্যোগ কাটিয়ে ঘুরে দাড়িয়েছেন চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এতে বেশ খুশি চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ৩শ ৬৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। যা থেকে ১০হাজার ৯শ৫০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে মনে করছে কৃষি অফিস। এ বছর আলু ক্ষেতে কোন রোগ বা পোকা-মাকড়ের আক্রমন ছিলো না। তাই ফলনে বিপর্যয় হয়নি। কিন্তু ঘূর্নিঝড় জাওয়াদের কারনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কিছুটা কম হয়েছে। উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের পাঙ্গাশিয়া ও জাহাজমারা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষককের বিস্তীর্ন ফসলের ক্ষেতে আলুর বাম্পার ফলন। ক্ষেত থেকে আলু তোলা এবং বাজারজাতকরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। জাহাজমারা গ্রামের কয়েক বছর ধরে আলু চাষ করে মোঃ ওবায়দুর রহমান। তিনি জানান, গত বছরের মত এ বছরেও আলুর ফলন ভালো হয়েছে। ঘূর্নিঝড় জাওয়াদের কারনে প্রথম দিকে আলুর চারা নষ্ট হয়েছে। আবার নতুন করে রোপন করেছি। ফলন ও যে দাম পেয়েছি তাতে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হবে আশা করছি।
তিনি আরো জানান, এ বছর ২ একরে (২শ শতাংশ) আলুর আবাদ করেছে। প্রতি মন বিক্রি করেছেন ৪৫০ টাকা। প্রায় অর্ধেক আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি আলু গুলো বিক্রি করার প্রস্তুতি চলছে। এই এলাকার কৃষক আঃ রশিদ জানান, ১৫ গন্ডা জমিতে আলুর আবাদ করেছি, ফলন অনেক ভালো হয়েছে। প্রথম ধাপে ১০ হাজার টাকার আলু বিক্রি করেছি। ক্ষেতে এখনও অনেক আলু আছে সেগুলো বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছি।
পাঙ্গাশিয়া গ্রামের আলু চাষী মোঃ বাবুল জানান, তিনি গত ৫ বছর ধরে আলুর আবাদ করে আসছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর আলুর ফলন অনেক ভালো। এ বছর ২০ গন্ডা জমিতে আলুর আবাদ করেছি, ফলনও অনেক ভালো। ক্ষেত থেকে আলু তুলেছেন। এ বছর আলু বিক্রি করে এক লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদি। ওই এলাকার আলু চাষী সবুজ বলেন, আমাদের এলাকার বেশীরভাগ চাষী আলুন ফলন নিয়ে খুশি। আলু আবাদে অনেকে আগ্রহ বেড়ে গেছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আলুন ফলন অনেক ভালো বলে মনে করছেন কৃষকরা। এদিকে প্রতি বছরই লালমোহন উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত আলু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় বিভিন্ন জেলায়। এতে আলু চাষ করে অনেকচাই সাবলম্বী হয়ে উঠছেন চাষীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এফ এম সাহাবুদ্দিন জানান, এ বছর লালমোহন উপজেলা লক্ষমাত্রার চেয়েও আলুর আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। ঘূর্নিঝড় জাওয়াদের কারনে। এ বছর ফলন ভালো ও দাম ভালো পাওয়ার কারনে কৃষকেরা পুশিয়ে উঠতে পারবে। এতে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি কাজে বিভিন্ন কৃষকদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়েছে থাকি। আগামীতে আরো কৃষকদের মাঝে আগ্রহ পারবে। আরও বেশী আলুর আবাদ হবে আমরা আশাবাদি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।