সর্বশেষঃ

আমার মা, তোফায়েল আহমেদ

আমার মা
তোফায়েল আহমেদ

আজ মায়ের চতুর্দশ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬-এর ২৫ ডিসেম্বর আমাদের সবার মায়া ত্যাগ করে তিনি এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

পৃথিবীতে প্রতিটি সন্তানের নিকট মা পরম আরাধ্য। আমার জীবনেও মা সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। মায়ের স্নেহ-আদর আর মমতায় আমি বড় হয়েছি। মায়ের স্নেহরাজি আজও আমার অন্তরে প্রবহমান। মায়ের স্নেহভরা পবিত্র মুখখানি যখনই চোখের সামনে ভেসে ওঠে, মনে হয়, এখুনি মায়ের কাছে ছুটে যাই। জন্মলগ্ন থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মা কত যত্ন করে আমাকে গড়ে তুলেছেন। সবসময় আমার মঙ্গল কামনায় নিজকে ব্যাপৃত রেখেছেন। মাকে ছাড়া আমি এক মুহূর্তও থাকতে পারতাম না। শৈশব আর কৈশোরের সেই দিনগুলোর কথা ভাবলে বুকের ভিতরটা হু-হু করে দু’চোখ সিক্ত হয়। হূদয় দিয়ে অনুভব করি মাতৃত্বভরা মমতাময়ী মায়ের কোমল স্মৃতি।
আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭০-এর ২৫ এপ্রিল। আজ থেকে ৪৬ বছর আগের সেদিনে অর্থাৎ ২৫ এপ্রিলে আমার জনসভা ছিল চট্টগ্রামের মিরেরশ্বরাইতে। বাবার মৃত্যু সংবাদ আমার আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে আমাদের প্রিয় নেতা এম এ আজিজকে জানিয়েছিলেন, ‘তোফায়েলের বাবা মৃত্যুবরণ করেছে। ’ মিরেরশ্বরাই’র জনসভায় এম এ আজিজ ভাইসহ যখন সভা করছি, তখন আমার বক্তৃতা শেষে আজিজ ভাই বললেন, আমি যেন অনতিবিলম্বে ভোলা চলে যাই। বিশাল সেই জনসভায় লাখো লোক জমায়েত হয়েছিল। বক্তৃতা শেষে প্রয়াত নেতা আক্তারুজ্জামান বাবু সাহেবের ভাইয়ের-যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন-গাড়িতে করে চাঁদপুর এবং ২৬ তারিখ সকালবেলা গ্রামের বাড়ি পৌঁছাই। ততক্ষণে বাবার দাফন হয়ে গেছে। বাবার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ১৯৭০-এর ১৭ এপ্রিল।
ভোলায় গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে আমার পরম শ্রদ্ধেয় মা-বাবা যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত, সেখানে কবর-ফলকে হৃদয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি উৎকীর্ণ আছে এভাবে—

‘মা, বাবা চলে গেছেন অনেক আগে
চির নিদ্রায় শায়িত আছেন তোমারই পাশে
তুমিও চলে গেলে আমাদের
সকলকে কাঁদিয়ে,
তবুও তোমরা আছো সর্বক্ষণ
আমাদের হৃদয় জুড়ে।
মা, প্রতি মুহূর্ত তোমাদের অভাব
অনুভব করি। ’

তোমার মনু (তোফায়েল)
লেখকঃ সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।