মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে তোফায়েল আহমেদের শোক ও স্মৃতিচারণ

বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোঃ নাসিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রবীন রাজনীতিবিদ ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তোফায়েল আহমেদ মোঃ নাসিমের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের জাতীয় ৪ নেতার অন্যতম সদস্য শহীদ এম মনসুর আলীর সুযোগ্য সন্তান ও মহান মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোঃ নাসিম আর আমাদের মাঝে নেই। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির একজন বর্ণাঢ্য ব্যাক্তি ছিলেন। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের তিনি মুখ্য ভুমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত মুক্তি যোদ্ধা। পিতা এম মনসুর আলী সাহেব মুজিব নগর সরকারের অন্যতম মন্ত্রী ছিলেন এবং তারই সুযোগ্য পুত্র মোঃ নাসিম মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক ছিলেন এবং পাবনার জেলার নের্তৃত্ব দিয়েছিলেন।

তিনি অনকেবার জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর তাকে গ্রেপ্তার করে অন্যায় ভাবে সাজা দেয়া হয়। যার কারনে ১৯৭৯ সনের সাধারন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে পারেন নাই। মোঃ নাসিম জীবনে কোনদিন নির্বাচনে হারেন নাই। তিনি ১৯৮৬-৯১-৯৬-২০১-১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। আমাদের দেশে যখন ওয়ান ইলেভেনের সরকার ক্ষমতায় আসে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নিয়ে তখন ও মোঃ নাসিমকে গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর কারাগারে রাখে, সেখানেই তিনি প্রথম ষ্টোকে আক্রান্ত হন। বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদ মোঃ নাসিম যিনি সংগঠক হিসেবে আওয়ামীলীগের প্রথম প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯২ তে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলে মুখপাত্র ছিলেন। ৯৬ সনে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি প্রথম ঢাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন, হয়েছিলেন গৃহায়ণ ও গণপুর্ত মন্ত্রী, তার পর ছিলেন স্বরাষ্ট মন্ত্রী এবং ২০১৪ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেছেন। তিনি অনেক আন্দোলনের পুর্বভাগে ছিলেন।

অনেকবার তিনি পুলিশ কর্তৃক নিযাতন সহ্য করেছিলেন, কিন্তু তিনি থেমে থাকেন নাই কোনদিন। নাসিম একজন বড় মাপের নেতা ছিলেন। এবং প্রতিটি আন্দোলনের মুখ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ১৯৮৬ সনের জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের হুইপ ছিলেন। এমন একজন মহান ব্যাক্তিত্ব আমাদের কাছ থেকে চলে গেলেন, তার অভাব কোনদিন পুরণ হবার নয়। সত্যিকার অর্থে তিনি একজন পরীক্ষিত নেতা ছিলেন, তার ব্যাবহার ছিল অমায়িক, আমরা তার বড় ছিলাম, তিনি আমাদের প্রচন্ড সম্মান করতেন। আমি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করি। তিনি ৩ ছেলে ও স্ত্রীকে রেখে গেছেন, তার পিতার নামে একটি হাসপাতাল আছে উত্তরায়, যেটা তিনি পরিচালনা করতেন। আজকে নাসিম নেই। নাসিমের মৃত্যুতে আমার মন পচন্ড খারাপ। পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি মহান আল্লাহ যেন তাহাকে বেহেস্ত নসীব করেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।