সর্বশেষঃ

লালমোহনে বিমলের বাঁশি বাজিয়েই চলছে সংসার

জাহিদ দুলাল, লালমোহন ॥ ৩৫ বছর বয়সী যুবক বিমল চন্দ্র মাতাব্বর। ছোট বেলা থেকেই তার শখ ছিল বাঁশি বাজানো। বাঁশি বাজানোর সেই শখ এখন আর শখেই সীমাবদ্ধ নেই। বাঁশি বাজানোই এখন বিমলের জীবিকা জোগারের অন্যতম উৎস। বিগত আট বছর ধরে ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কালমা গ্রামের নোকুল চন্দ্র মাতাব্বরের ছেলে বিমল চন্দ্র বাঁশি বাজিয়েই চালাচ্ছেন সংসার।
বাঁশুরিয়া বিমল চন্দ্র মাতাব্বর বলেন, ছোট বেলা থেকেই বাঁশি বাজানো শখ ছিল। তবে এখন বাঁশি বাজিয়েই চালাতে হয় সংসার। গুরুর কাছ থেকে শিখে বিগত আট বছর ধরে বাঁশের বাঁশি বাজানোকে পেশা হিসেবে নিয়েছি। যেকোনো গান একবার শুনলেই এখন বাঁশিতে সেই গানের সুর তুলতে পারি। আর এই সুর তুলেই করছি অর্থ উপার্জন।
তিনি বলেন, অনেক সময় কাজের প্রয়োজনে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, নরসিংদী ও চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাই। দূরে কোথায়ও গেলে দেড় থেকে দুই মাসের মতো থাকতে হয়। দূরের অনুষ্ঠানগুলোতে পারিশ্রমিক ভালো পাওয়া যায়। ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় গিয়েও বাঁশি বাজাই। কীর্তন, যাত্রাপালা, মিছিলসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমার ডাক পড়ে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়ে এক হাজার থেকে বারো শত টাকা পাই। আর অন্যান্য অনুষ্ঠানে পনেরশত থেকে দুই হাজার টাকা পাই। এতে করে প্রতি মাসে অন্তত পয়ত্রিশ হাজার টাকার মতো উপার্জন করতে পারি।
বাঁশুরিয়া বিমল আরো বলেন, সংসারে স্ত্রী-সন্তানসহ মা-বাবা আছেন। আমার আয়ের ওপরই তারা নির্ভরশীল। আমি যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চালাই। আমার ইচ্ছা একটি বাউল গানের দল গড়ার। ওই দল গড়তে হলে কিছু বাধ্যযন্ত্রের প্রয়োজন। যার জন্য প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার দরকার। হাতে তেমন টাকা না থাকায় তা কিনতে পারছি না। ওইসব বাধ্যযন্ত্র কেনার জন্য সরকারি-বেসরকারি অনুদান পেলে আমি বাউল দলটি গড়তে পারবো। এতে করে আমার সঙ্গে কর্মের সুযোগ হবে আরো বেশ কয়েকজনের। নিজে দল গড়তে পারলে আয়ও ভালো হতো। এ জন্য আমার প্রয়োজনীয় ওইসব বাধ্যযন্ত্র কেনার জন্য সরকারি-বেসরকারি অনুদান কামনা করছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন জানান, ইউনিয়নের নাগরিকদের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা পাশে থাকছি। অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের প্রয়োজনে সরকারিভাবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ব্যক্তির কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।