ঋণের ভাড়ে হাবুডুবু গলাচিপার প্রতিবন্ধী বই ব্যবসায়ী

পটুয়াখালী গলাচিপা উপজেলা আদর্শ লাইব্রেরীর মালিক প্রতিবন্ধী মোঃ মিজানুর রহমান ব্যাংক লোনের কিস্তি পরিশোধ না করতে পড়ে পরিবার নিয়ে মানবতার জীবন যাপন। সরজমিনে জানা যায়, ‘আদর্শ লাইব্রেরী’ নাম মাত্র সাইনবোর্ড রয়েছে গলাচিপা পৌরসভা আট নম্বর ওয়ার্ড মুসলিম পারায়। এই লাইব্রেরী থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বই সংগ্রহ করতো। দোকান ভাড়া, সংসারে খরচ এবং বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যাংকর কিন্তু পরিশোধ না করতে পেরে ব্যবসা ছেড়ে চলে যায়।
উপজেলার পক্ষিয়া গ্রামের মোঃ সিদ্দিকুর রহমান এর ছেলে প্রতিবন্ধী মিজানুর ৫ সদস্য নিয়ে সংসারে ভালো থাকার জন্য বই ব্যবসায় নিয়োজিত হন। এই ব্যবসার জন্য নিজের সব সম্বলের সাথে যোগ করেন বিভিন্ন অর্থলগ্নী সংস্থা ও ব্যাংকে ঋণ। প্রথমে আদর্শ লাইব্রেরীর বেচাবিক্রি ভাল থাকলেও বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ব্যাবসায়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিভিন্ন প্রকাশনী প্রতিষ্ঠান থেকে নগত অর্থে বই সংগ্রহ করা হয়েছিল কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় বই বিক্রি শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। এভাবেই আর্থিক যোগান দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে যায়। করোনা কালীন সময়ে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হলে সংসারের খরচ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হয়। এ কারণেই নিয়মিত ঋনের কিস্তি পরিশোধ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন প্রতিবন্ধী। ভাড়ি কাজ না করতে পেরে লাইব্রেরী দিয়েছিলাম। দোলনা প্রকাশনী মতো অন্য প্রকাশনী থেকে নগত অর্থ বই কেনা হয়। বন্ধের কারণে শিক্ষার মৌসুম শেষ হলে মজুত করা বই কেজি (ওজনে) বিক্রি করতে হয়েছে। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় আট থেকে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়। এই ব্যবসাই আমার জীবন শেষ হয়েছে। কিস্তি ও সংসার চালানোর কোন পথ নেই।
এ ব্যাপারে গলাচিপা শাখার সোনালী ব্যাংকের ঋণ পরিদর্শক জানান, ‘আদর্শ লাইব্রেরী’ মালিক মোঃ মিজানুর রহমান, হিসাব নং ৪৩১০৯৫২০০০০৫ সোনালী ব্যাংক গলাচিপা শাখা এর নামে ২০০০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা ঋণ রয়েছে। তিনি যথাসময়ে কিস্তি পরিশোধ না করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার খোজখবর নিচ্ছে এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।