করোনাও পৃথক করতে পারেনি মা-সন্তানের বন্ধন

প্রতীকী ছবি

একদিন আগেও সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখা শিশুটি আজ নীরব। সবাই করোনাভাইরাসের ভয়ে দূরে থাকলেও নাড়িছেঁড়া ধনের সঙ্গ ছাড়েননি মমতাময়ী মা। করোনায়ও পৃথক করতে পারেনি মা সন্তানের বন্ধন।

মা-সন্তানের নিঃস্বার্থ ও নির্মল ভালবাসা কিংবা আত্মত্যাগের উপাখ্যান যুগ যুগ ধরে দৃষ্টান্ত হয়ে আসছে। তারই অনন্য দৃষ্টান্ত এ করোনাকালে দেখা গেল বিয়ানীবাজারের মাথিউরায়। উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের নালবহরের আবুল কালাম ও নাজমা বেগমের নয় বছরের শিশু সন্তান সায়েম আহমদ করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর জানা যায় সোমবার রাতে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন বাড়িটি লকডাউন করে। তার সঙ্গে গত ২২ মে নমুনা নেওয়া আরো ৮ জনের মধ্যে ৭ জনের ফলাফল নেগেটিভ আসে। সায়েমের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ দাদির ফলাফল আসেনি। বুধবার সকালে এ পরিবারের আরো ৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা।

শিশু সায়েমের ফুফা পল্লী চিকিৎসক আবুল কাশেম গত ১৯ মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে ফুফা আবুল কাশেমের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছে নয় বছরের সায়েম।

সায়েমের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘জান থাকতে ফুয়ার (ছেলে) লগ (সঙ্গ) ছাড়তাম নায়। বাড়িত চিকিৎসা খরলে লগে থাখমু (থাকবো), আসফাতালো (হাসপাতাল) নিলেও ফুয়ার লগে থাখমু।

ইউপি সদস্য জাহেদ হোসেন বলেন, রাতে খরব পেয়ে আমরা এলাকার সবাইকে সচেতন করছি। পুরো এলাকায় চাপা আতংক বিরাজ করছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিহাব উদ্দীন বলেন, ইউনিয়নের সকল নাগরিককে সচেতন করতে প্রচারণা চালিয়েছি। এর মধ্যে অবুঝ শিশুটির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ আমাদের জন্য বিরাট আঘাত। ইউনিয়নবাসীকে ভয় না পেয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাক্তার আবু ইসহাক আজাদ বলেন, শিশু সায়েমের শরীরে কোন উপসর্গ (সোমবার পর্যন্ত) নেই। এছাড়া সায়েমের মা ছেলের সঙ্গ ছাড়বেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন। যার কারণে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না পাঠিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সূত্র- সমকাল

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।