সর্বশেষঃ

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ভোলাবাসী, ৩ মাস ধরে বন্ধ বিদ্যুৎ প্লান্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদিকে গরম আর অন্যদিকে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ভোলাবাসী। দিনে ও রাতে বিদ্যুতের এমন অবস্থায় বিপর্যস্ত জনজীবন। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার মালিকরা। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৩ মাস ধরে সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট মেশিনটি বন্ধ থাকায় এ অবস্থার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে রেন্টাল কর্তৃপক্ষ বলছে বিষয়টির সমাধানের ব্যাপারে প্রচেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কখনও ৩৮ ডিগ্রি কখনও বা ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা ওঠানামা করায় প্রচ- তাপদাহ বিরাজ করছে উপকূলীয় জেলা ভোলায়। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। এর মধ্যে আবার বিদ্যুতের লোডশেডিংয় ভোগান্তির মাত্রা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, চরম দুর্ভোগে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষগুলো। বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও।
ভোলার ইলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী জহির ও মিজান বলেন, আমাদের ব্যবসা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক লোডশেডিং। ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ক্যাবল অপারেটর কৃষ্ণ দাস বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ।
গৃহিণী লুৎফা বেগম বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং অনেক বেড়েছে। গরমের কারণে রাতে আরও বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ফর ডিস্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) কোম্পানি লিমিটেড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় পুরো জেলায় ৫ লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে। যারা জেলার ৭ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছেন। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্ট টানা ৩ মাস ধরে বিকল থাকায় বিদ্যুতের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ দিতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা।
তাই বাধ্য হয়েই লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে জানান ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউনুস। তিনি বলেন, ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ৮০ হাজার গ্রাহকের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে আমরা পাচ্ছি ২২ মেহাওয়াট। যে কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে বাধ্য হচ্ছি। এ জেলায় যদি গ্রিড সাবস্টেশন করা যায় তাহলে এমন সমস্যা থাকবে না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, ৪ লাখ ৩৮ হাজার গ্রাহক থাকলেও এ মুহূর্তে তাদের তেমন লোডশেডিং নেই। জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ হচ্ছে বিদ্যুৎ।
ভোলার ৩৪.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেশিনে সমস্যা হচ্ছে। আশা করি আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে। এদিকে দ্বীপজেলা ভোলায় গ্রিড সাব স্টেশন স্থাপন হলে বিদ্যুতের এ সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধান চান ভোলাবাসী।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।