সর্বশেষঃ

ভোলায় ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন” বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মনিরুজ্জামান : ভোলায় ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন” বিষয়ক ’সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘ এক সেমিনারের আয়োজন করেছে ভোলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। মঙ্গলবার ( ৩০ এপ্রিল ) ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভোলা-২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী গোলাম হায়দার তালুকদার বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে রোবটিক্স প্রযুক্তির কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮০ কোটি কর্মী কাজ হারাবে। প্রতিযোগিতায় আমাদেরকে টিকে থাকতে হলে ডারউইনের সেই বিবর্তনবাদের মতো যোগ্যরাই টিকে থাকবে এ নীতি অনুসরন করতে হবে।বাংলাদেশে বর্তমানে তরুনের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি,যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি। আমাদের এ তরুণ সমাজকে যে কোন উপায়ে মানব সম্পদে রুপান্তর করে ৪র্থ শিল্পবিল্পবের সারথী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য তরুন সমাজকে কারিগরী শিক্ষার মাধ্যমে মানব সম্পদে রুপান্তর করে দেশের সর্বক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি বিদেশেও এদেরকে পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্বল। তিনি আরও বলেন,যে দেশে কারিগরি শিক্ষার হার যতবেশি,সে দেশের মাথাপিছু আয়ও তত অধিক। চীন,যক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য, জাপান,দক্ষিণ কোরিয়া,সিঙ্গাপুরের মতো দেশে প্রযুক্তি ভিক্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কারণে সেখানকার মানুষের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি।৪র্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারা অর্জিত সুযোগগুলো কাজে লাগাতে এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্চ মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়া ১৯ থেকে ২৪ বছর বয়সের মধ্যে তার কর্মীবাহিনীর ৯৫ শতাংশকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান করেছে।জার্মানিতে এ হার ৭৫ শতাংশ,জাপানে ৬৬ শতাংশ,সিংগাপুর ৬৫,অষ্টেলিয়ায় ৬০,চীন ৫৫,যুক্তরাষ্ট্রের ৫২ শতাংশ এ শিক্ষা গ্রহণ করছে। দু :খের বিষয়,বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি অবহেলার কারণে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ক্রমশ ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।যার কারণে বাড়ছে বেকারত্বের হার। এ জন্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে ভিত্তি তৈরি করে গেছেন, সে পথ ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। কাজেই জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়,জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাললাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্কসহ সবাইকে এক হয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন বিষয়টি অনুধাবন করে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য স্বল্প,মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর মো.নাছির আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে আয়তনের তুলনায় জনবহুল এই দেশে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে সুখী সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশ গড়া এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে স্মার্ট স্বাস্থসেবা, স্মার্ট ট্রান্সপোর্টেশন,স্মার্টইউটিলিটিজ, নগর প্রশাসন, জননিরাপত্তা, কৃষি, ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, বোরটিক্স, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ও সাইবার সিকিউরিটি প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চীফ ইন্সট্রাক্টর মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায়
আরও বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মীর মঞ্জুর মোর্শেদ,একাডেমিক ইনচার্জ মুজিব আলম মিঠু, বোরহানউদ্দিন আব্দুল জব্বার কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম,ভোলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ নীল রতন দত্ত,ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো সাইদুর রহমান,অফিসার ইনচার্জ মো,শাহীন ফকির, নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার,ওজোপাডিকোর সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ হোসেন সন্যামত,জেলা আইডিইবির সাধারণত সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।