সবজির চাহিদা পূরণে বাঁশখালীর উৎপাদিত সবজি যাচ্ছে সারাদেশে

মুহাম্মদ আতিকুর রহমান হান্নান (বাঁশখালী প্রতিনিধি) ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকা গুলোতে শুকনো মৌসুমে নানা ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে। বর্তমান শীত মৌসুমে বাঁশখালীর উপকূলীয় খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল ও গন্ডামারা উপকূলীয় এলাকার চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন সবজি উৎপাদনে। শীতকালীন নানা ধরনের সবজি যেমন- ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, মূলা, আলু, লাল শাক, পুঁই শাক, বরবটি, শিম, ফরাস শিম, লাউ, মরিচ, খিরা (শশা), ধনিয়া, তীত করলা, মিষ্টি কুমড়া’র উৎপাদন এখন চোখে পড়ার মত। এখানকার উৎপাদিত সবজি পাইকারী দামে কিনে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান বিক্রেতারা। এদিকে উৎপাদিত সবজি সারাদেশে বিক্রি করে ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) সকালে উপজেলার সাগর উপকূলীয় সরল ও বাহারছড়া এলাকায় সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জমি গুলোতে প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষ হয়েছে। এখানে চাষাবাদকারী কয়েকজন চাষীর সাথে কথা হলে তারা জানান, বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকা গুলোতে প্রচুর পরিমাণ সবজি চাষ হয়। কারণ উপকূলীয় এলাকার মাটি উর্বর ও ফলন উপযোগী হওয়ায় বার মাসই নানা ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব হয় এখানে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে চাষীরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে ব্যস্ত সময় কাটায়।
উপকূলীয় সবজি চাষী নাছির বলেন, এখানকার সবজি গুলো খুবই সুস্বাদু হয় এবং পরিবেশ যথাযথ থাকলে অল্প দিনেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। আমাদের ক্ষেতে উৎপাদিত সবজি সারাদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার মাটি খুবই উর্বর তাই অল্প সময়ে ফলন ভালো হয় জানালেন স্থানীয় চাষী মো. ফরহাদ, আবু ও জাফর আহমদসহ আরো অনেকই।
অন্যদিকে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বাঁশখালীর বিভিন্ন বাজার থেকে এসব সবজি ক্রয় করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারী দরে বিক্রি করছে। বাঁশখালীতে বর্তমানে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, মূলা, আলু, লাল শাক, পুঁই শাক, বরবটি, শিম, ফরাস শিম, লাউ, মরিচ, খিরা (শশা), ধনিয়া, তীত করলা, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরনের সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল বেলা উপজেলার পুঁইছড়ির নাপোড়া, চাম্বল বাজার, শীলকূপ টাইম বাজার, জলদী মিয়ার বাজার, বৈলছড়ির চেচুরিয়া বাজার, কালীপুরের রামদাশ হাট, সাধনপুরের সাহেবের হাট, বাণীগ্রাম বাজার ও পুকুরিয়া চৌমুহনী বাজার এলাকায় খুচরা শাক সবজির পাশাপাশি পাইকারী দরেও শাক সবজি পাওয়া যায়। যাহা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম শহিদ উল্লাহ বলেন, বাঁশখালী হচ্ছে একটি উর্বর এলাকা। এখানে সকল ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়। আমার জানামতে, বাঁশখালী থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়। বর্তমানে বাজারে সবজির দাম একটু বেশী থাকলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যে তা নাগালে আসবে বলে তিনি জানান। বাঁশখালীর উৎপাদিত সবজি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। বাঁশখালীতে উৎপাদিত সবজি বাঁশখালীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানিসহ বাঁশখালীবাসী কমমূল্যে শীতকালীন সবজি ভোগ করতে পারবে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ মৌসুমে বাঁশখালীর বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। সবজি উৎপাদনে কম পরিশ্রম ও কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় চাষিরা এতে আগ্রহী হচ্ছে। তাছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে এবং কৃষকরা যাতে সবজির ন্যায্য মূল্য পায়, সে ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস সতর্ক রয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।