সর্বশেষঃ

ভোলায় গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল পৌঁছে দিলেন ডিসি আরিফুজ্জামান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাড়িতে কে আছেন ? বাইরে আসেন। আমি জেলা প্রশাসক (ডিসি) আরিফুজ্জামান। উঠেন, আপনাদের জন্য কম্বল নিয়ে এসেছি। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়ার কোরারকাট বেড়িঁবাধ, শিবপুর ইউনিয়ন ঘুরে এভাবেই ছিন্নমূল, বয়স্ক ও দিনমজুর শ্রেণির ঘুমন্ত মানুষকে কম্বল দিয়েছেন ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান। জেলা প্রশাসকের হাত থেকে কম্বল পেয়ে খুশি মানুষগুলো আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, এভাবে কেউ আমাদের ডেকে শীতবস্ত্র দেয়নি। নাম লিখে নিয়ে যায়, কিন্তু সেই কম্বল আমরা আর পাই না।

কম্বল পাওয়া ধনিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কোররাহাট এলাকার রিকসা চালক আবুল বাশার বলেন, আমি রিকশা চালক। রাত হলে ছেলে মেয়ে নিয়ে শীতে খুব কষ্ট করি। রোজগার করে যে টাকা পাই তাদিয়ে একটা ভালো কম্বল কিনার সাদ্য নেই। অনেকের কাছে একটা কম্বল চাইচিলাম কেউ দেয়নি। আজ ডিসি স্যার আমার বাড়ীতে এসে নিজে শীতবস্ত্র দিয়েছেন। এটা আমার জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া। মনে হয় আল্লাহ আমার চাওয়া কবুল করছে। এখন রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারব।

৬০ বছরে বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন,শীতে রাতে ঘুমাতে অনেক কষ্ট হতো। অনেক সময় শীতের কারণে ঘুম ভেঙে যেত কিন্তু আজকে স্যার আমাকে একটা শীতবস্ত্র হিসাবে কম্বল দিয়েছেন। আজ আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারব।

শীতে কম্বল পাওয়া  মরিয়ম বলেন, আমার স্বামী একজন জেলে। নদীতে তেমন কোন মাছ নাথাকায় আয়রোজগার তেমন হয়না। পোলাপাইনরে দুইটা শীতের পোশাকও কিনে দিতে পারতেছেনা। এই শীতের মধ্যে রাতে অনেক কষ্টে  ছেলে-মেয়ে নিয়া ঘুমাই। জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে একটা কম্বল দিয়েছে। এখন ভালো করে ঘুমাতে পারব।

ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) আরিফুজ্জামান বলেন, রাতের অন্ধকারে ছিন্নমূল মানুষের দেখা পাওয়া যায় বেশি। তাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কম্বল নিয়ে প্রকৃত দুঃস্থ শীতার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য রাতের অন্ধকারকে বেছে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন থেকেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। এছাড়া ভোর থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। উপজেলা কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিযয়ে রাতেই কম্বল নিয়ে রওনা হয়েছি। কম্বল পেয়ে ছিন্নমূল মানুষেরা খুশি হয়েছেন।

ডিসি আরও বলেন, আমরা এবছর দুযোর্গ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রান ভান্ডার থেকে ৪৩ হাজার ৫শ কম্বল পেয়েছি। যেগুলো আমরা উপজেলা ও ইউনিয়ন ভিত্তিক বিবাজন করেছি। ইতিমধ্যে স্ব-স্ব উপজেলা দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরন করেছে। পর্যায়ক্রমে জেলার ছিন্নমূল মানুষদের পাশে দাঁড়ানো হবে। এই শীতে যেন কেউ কষ্ট না পায় সেদিকে জেলা প্রশাসনের নজর রয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রিপন কুমার সাহা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. ইউনুস, সিনিয়র সহকারী কমিশনার নেজারত শাখা মো: আবু সাঈদ, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হকসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।