কৃষি জমিতে ইটভাটা, দুলারহাটে জোর করে মাটি কাটার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোলার দুলারহাট থানার নীলকমল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পাঙ্গাসিয়া খাল গোড়া এলাকায় কৃষি জমি কেটে ইটভাটা তৈরীর কাজ করছেন মোশারফ কন্টেকটার নামের এক ব্যক্তি। ইট ভাটার নাম দেয়া হয়েছে তেতুলিয়া। মোশারফ কন্টেকটারের নিজের ক্রয়কৃত জমি ছাড়াও পাশের অন্য মানুরেষর ধান চাষ করা জমি থেকে জোর করে বেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। তেতুলিয়া ইটভাটা নিয়ে এলাকাবাসী যেন কোন রকম প্রতিবাদ বা কথা বলতে না পারে তার জন্য ওই এলাকার মাসুদ মাঝি নামে একজন দালাল রাখছেন মোশারফ। মাসুদ মাঝি ওই ইটভাটার মাটিকাটাও ইটভাটার কন্টেকটারের নিজস্ব লোক বলে জানান এলাকাবাসী।
ওই এলাকার ৭০ বছর বয়সী নুর ইসলামের জমি থেকে বেকু দিয়ে জোর করে মাটি কাটার কারনে গত বুধবার দুলারহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তার ছেলে জসিম জানায় থানায় অভিযোগ দেয়ার পর তারা আমাদেরকে হুমকি ধামকি ও ধরপাকড় করার কারণে আমরা ৫বছরের জন্য আমাদের ধান চাষের জমি তাদের কাছে বন্ধক রাখতে বাধ্য হয়েছি। এ কারণে ধান পাকার আগেই কাঁচা ধানগাছ কেটে নিচ্ছি।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে তেতুলিয়া ইটভাটায় গিয়ে ছবি এবং ভিডিও করতে গেলে বাঁধা প্রদান করেন মাসুদ মাঝি। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর উত্তোজিত হয়ে মাসুদ মাঝি বলেন, আমাদের জমিতে আমরা ইটভাটা করছি আপনারা কেন ছবি করবেন। ভিডিও বা ছবি করতে নিষেধ করেন তিনি। ইটভাটার মালিক কে এবং তাকে ডাকতে বললে তিনি বলেন, ওনি হলেন সচিবের ভাই মোশারফ কন্টেকটার।


গ্রামাঞ্চলের আবাসিক এলাকায় কৃষি জমিতে ইটভাটার করার কারণে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তারা ইটভাটার মালিকদের ভয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। এলাকার মো. কবির, মো. সিরাজ, মো. ইলিয়াছ, মো. জসিমসহ অনেকে জানান, কৃষি জমিতে ইটভাটা করা হচ্ছে। তাদের ক্রয়কৃত জমি ছাড়া বাইরের মানুষের জমি জোর করে ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে।
ইটভাটার পাশের জমির মালিক মো. ইছমাইল হোসেন মামুন জানান, বর্তামন তেতুলিয়া নামের ইটভাটা এলাকায় আমাদের প্রায় ৮এরক জমি ওরা লিজ নিতে চেয়েছিল। আমরা ফসলী জমিতে ইটভাটার জন্য লিজ দিতে রাজী না হওয়ার কারণে আমাদের জমির সিমানা বরাবর ভেকু দিয়ে গর্ত করে মাটি কাটার কারণে এখন আমাদের কৃষি জমি তাদের গর্তের মধ্যে ভেঙ্গে পড়ছে। গত ২৭ অক্টোবর সকালে আমি নিজে গিয়ে মাটি কাটার দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে গেলে মাসুদ মাঝি, নুরে আলম ও সুমনসহ আমাকে মারধর করে এবং আমার পকেটে থাকা ১১ হাজার ৫শত টাকা নিয়ে যায়। আমি এই ব্যাপারে পরদিন ২৮ অক্টোবর দুলারহাট থানায় এজাহার দাখিল করি।
আবাসিক এলাকায় কৃষি জমিতে ইটভাটা ও জোর করে মাটি কাটা প্রসঙ্গে মোশারফ কন্টেকটার বলেন, আমাদের জমিতে আমরা ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটার জন্য কাজ করছি। ইছমাইল হোসেন মামুন গংদের জমি আমাদের পাশে অবস্থিত। তাদের জমি থেকে আমরা মাটি কাটি নাই। মামুনদের জমিগুলো আমরা লিজ নিতে চেয়েছিলাম। ওরা ওদের জমি দেয়নি এবং আমরা যাতে ওইখানে ইটভাটা করতে না পারি তার জন্য তার বিভিন মামুন বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে।


দুলারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মো. ইছমাইল হোসেনের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।