দক্ষিণ এশিয়ার সেরা প্রশিক্ষক ভোলার ছেলে ইউসুফ ইফতি

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ট্রেইনিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএসটিডি) আয়োজিত ষষ্ঠ রিজিওনাল কনফারেন্সে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন প্রশিক্ষক ইউসুফ ইফতি। গত ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর ভারতের কলকাতা শহরের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে দক্ষিণ এশিয়ার শতাধিক প্রশিক্ষককে নিয়ে আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় এ সন্মান অর্জন করেন তিনি। বাংলাদেশের করপোরেটে সেলস লিডারশিপ বিষয়ক ট্রেনিংয়ে কাজ করে চলেছেন ভোলার ছেলে প্রশিক্ষক ইউসুফ ইফতি।
এ বিষয়ে ইফতি বলেন, দুই মাসব্যাপী বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথমে ৪০ জন, এরপর ২০ জন, এরপর প্রথম ১০ জন এবং চূড়ান্তভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় জনকে রানার-আপ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যেখানে সব দেশের ট্রেইনারদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করি, আর দ্বিতীয় হয়েছে হয়েছেন দিল্লির আনুজা সেহগাল এবং কলকাতার মদুসুধন দত্ত। প্রথম দশজনের মধ্যে ছিলেন যথাক্রমে ইউসুফ ইফতি, আনুজা সেহগাল, মদুসুধন দত্ত, কেদারনাথ মুখার্জি, পার্থা দত্ত, পেরেসি সাবওয়ালা, প্রবীণ সিংহ, সোম শুভ্র মুখার্জি, উত্তম সাহায় ও কানাদ ভট্টাচারিয়া।
উল্লেখ্য, এখানে বিচারক প্যানেলে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৫ জন সদস্য ছিলেন এবং কেউ কাউকে জানেননি এবং খুবই গোপনীয়তা রেখে বিষয়টি সম্পন্ন করেন। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের সময় ভারেতের বিখ্যাত এইচআর ব্যক্তিত্ব টিভি রাও এবং বাংলদেশের এইচআরের বহুল পরিচিত মুখ মোশাররফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭০ সাল থেকে ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ট্রেইনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএসটিডি) এশিয়ান সাবকন্টিনেন্ট এ প্রতিবছর বিভিন্ন কনফারেন্স আয়োজন করে আসছেন। এই বছরের কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য এজিলিটি এবং সাসটেইনেবিলিটি ফর অরগানাইজেশন। কনফারেন্সটিতে ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের প্রশিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে ইউসুফ ইফতি ফিউচার আইকনের সিইও। এই আয়োজনে বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী এবং ওয়েস্ট বেঙ্গলের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ইউসুফ ইফতি গত ২ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের করপোরেট জগতে বেশ সুনামের সঙ্গে সেলসে এবং সেলস লিডারশিপ ট্রেইনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে ট্রেইনিংয়ের ওপর পুত্রা বিজনেস স্কুল, পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রি করছেন।
ইউসুফ ইফতি তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এই অর্জন আমার জন্য তথা বাংলাদশের সকল ট্রেইনারদের জন্য অনেক বড় একটা ভালো লাগার ব্যাপার। সেই প্রাচীন আমল থেকেই আমাদের দেশের করপোরেট মালিকরা বিদেশি ট্রেইনারদের প্রতি অনেক আকৃষ্ট থাকেন। তবে আজকে প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশেই এখন বিশ্ব মানের ট্রেইনার আছেন। যারা বাংলাদেশের মানুষদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারেন। এই অর্জন আমাকে সামনের দিকে কাজ করতে অনেক অনুপ্রেরণা জোগাবে। তথা আমাদের এই উপমহাদেশে আরও অনেক কাজ পেতে সাহায্য করবে। অনুষ্ঠান এর পরপরই আমি ভারতে নবরতœ কোম্পানি কোল ইন্ডিয়ার ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের কাছে থেকে ওনার কোম্পানিতে প্রাথমিক কাজ করার আমন্ত্রণ পেয়েছি যা শিগগিরই করব। পরিশেষে আমার এই অর্জনে যারা আমাকে গড়ে তুলেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বিশেষ করে আমার মেন্টর কাজি এম আহমদকে।
এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে ২৫ জন করপোরেট ব্যক্তিত্ব অংশগ্রহণ করেন। যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. ফরিদ সোবহানি, মোশাররফ হোসেন, নিলুফার করিম, জানিবুল হক, রওশন আলি বুলবুল প্রমুখ। উল্লেখ্য, ইউসুফ ইফতি’র গ্রামের বাড়ী ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।