ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের দাবী

মনপুরায় বিধ্বস্ত ৪ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ দিয়ে ফের জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার আশংকা

ভোলার মনপুরা উপকূলে ঘূর্ণীঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের তোড়ে উপজেলার ৪ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। এছাড়াও জোয়ারের তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়া দুইটি স্থানের বেড়ীবাঁধ বালিরবস্তা ও মাটি ফেলে কোনরকম মেরামত করেছে পাউবো। যে কোন সময়ে সাধারন জোয়ারের পানির তোড়ে সদ্য মেরামতকৃত ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ ও বিধ্বস্ত বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ফের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা স্থানীয়দের। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে জোয়ারে পানি প্রবেশ করতে পারে বলে আশংকা করছেন।


এদিকে মনপুরার বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় সরকারী ও রেডক্রিসেন্ট ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন। এই ত্রাণ নিয়ে দুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ক্ষতিগস্ত অনেই ত্রান পায়নি, বরং ওল্টো যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তাদের বেশিরভাগই ত্রাণ সুবিধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ দুর্গত এলাকার মানুষের। তাই এইখানকার স্থানীয়রা ত্রাণ নয়, স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মানে দাবী করেছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও রেডক্রিসেন্টের দাবী ক্ষতিগ্রস্তদের চেয়ে ত্রানের পরিমান কম হওয়ায় সব ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া সম্ভব হয়নি। তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।


সরেজমিনে গত ৪ দিন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দখো গেছে, উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০ টি স্থানে বেড়ীবাঁধের অবস্থা নাজুক। এর মধ্যে হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট, চরযতিনের পূর্ব ও পশ্চিমের বেড়ীবাঁধ, সোনারচরের পূর্ব ও পশ্চিমের বেড়ীবাঁধ, চরফৈজুদিনের পশ্চিম পাশের ব্রিজের পাশের বেড়ীবাঁধ, মনপুরা ইউনিয়নের কূলাগাজী তালুক গ্রামের পশ্চিম পাশের বেড়ীবাঁধ, কাউয়ারটেক গ্রামের পশ্চিম পাশের বেড়ীবাঁধ, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাষ্টারহাটের পশ্চিম পাশের বেড়ীবাঁধ ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের সূর্যমুখী বেড়ীবাঁধ, বাতির খাল ও ঢালী মার্কেট সংলগ্ন এলাকার বেড়ীবাঁধের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও দুইটি মসজিদ ও একটি মাদ্রাসার ক্ষতি সহ ৩২০টি বাড়ী সম্পূর্ন ক্ষতি হয়। এছাড়াও ৫০ হেক্টর শস্যক্ষেত ও ১১ কিলোমিটার পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে।


ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন এলাকার রহিমা, কুলসুম, আয়শা, জাফর, আঃ রহিম, মজিলক মাঝি, শাহাবুদ্দিন, নাজির, ফিরোজ, সকি, সেকান্তর, মজির উদ্দিন সহ দুর্গত এলাকার হাজারো মানুষ জানান, ত্রাণ তাদের কপালে নাই। ত্রাণের পরিবর্তে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের দাবী। যাতে তারা ঘূর্ণীঝড় বা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস মিয়া জানান, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে আসা ৬ শত জনকে ত্রান সুবিধা আনা হয়েছে। অবশিষ্ট ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যায়েক্রমে এই সুবিধার আওতায় আনা হবে।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা জানান, ঘূর্ণীঝড়ে ৪ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সমস্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে যে কোন সময় লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে বলে পাউবো কে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের সবাইকে ত্রান সহ যার যেই রকম সুবিধা দরকার তাদের সেই সুবিধার আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ৪ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ আগামী আমবশ্যার পূর্বেই মেরামত করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।