দেখেও না দেখার ভান করছেন বিআইডব্লিউটিসি, ইলিশা ফাঁড়ি, নৌ-থানার কর্মকর্তারা

ইলিশা ফেরী ঘাটের চাঁদাবাজী রুখবে কে ?

(অভিযুক্ত ইউসুফ পাটোয়ারী)

দেখেও না দেখার ভান করছেন বিআইডব্লিউটিসি, ইলিশা ফাঁড়ি, নৌ-থানার কর্মকর্তারা

বনি আমিন, ইলিশা ॥ ভোলা জেলা থেকে আমদানি এবং রপ্তানির অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ইলিশা ফেরি। আর এই ইলিশা ফেরিঘাট দিয়ে পারাপার করতে হয় বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে। বিভিন্ন সময়েই ফেরী পারাপার হওয়ার ক্ষেত্রে গাড়ির লম্বা সিরিয়াল লেগেই থাকে। বর্তমানে ফেরিঘাটে কাঁচামালের গাড়ির চাঁপ থাকার কারণে ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে গাড়ি থেকে নির্ধারিত টাকা আদায় করেন চাঁদাবাজরা। দাবীকৃত টাকা না দিতে পারলে উঠতে ফেরিতে উঠতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪দিন পর্যন্ত। এই সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে, ভোলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরাও তাদের কিছুই করতে পারে না। এই সিন্ডিকেটের অন্যতম হলো ইউসুফ পাটোয়ারী।
এমন অভিযোগ এর ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সরজমিনে প্রমান মিলে তার চাঁদাবাজীর। এতে দেখা যায় তিনি একটি ট্রাকের ড্রাইভারের সাথে দেন-দরবার করতে। প্রথমে ট্রাক ড্রাইভার দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে ট্রাকে থাকা কাঁচামালের কথা চিন্তা করে ইউসুফ পাটোয়ারীর দাবীকৃত ১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন এবং তার ট্রাকটি দ্রুত ফেরীতে উঠিয়ে নেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, সে একটি গাড়ি লোড দিয়ে তরমুজ নিয়ে আসছিল ইলিশা ঘাটে। ইউসুফ পাটোয়ারী নামে এক ব্যক্তি গাড়ির সামনে এসে ড্রাইভারকে বলে তাকে স্পেশাল ১০০০ টাকা দেওয়ার জন্য। যদি ১০০০ টাকা না দেওয়া হয় তাহলে উঠতে দেবে না। তখন ড্রাইভার কাঁচামালে নষ্ট হয়ে যাওয়ার চিন্তা করে তাকে ১০০০ টাকা দিতে বাধ্য হয়।
ইলিশা ফেরীঘাটে চাঁদাবাজীর ঘটনা নিত্যদিনের। বিশেষ করে তরমুজের মৌসূম আসলেই চাঁদাবাজীর ওই সিন্ডিকেট আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। ট্রাক প্রতি দাবীকৃত টাকা না দিতে পারলে হতে হয় হয়রানি, এমন শারীরিক লাঞ্ছিতও হতে হয়। তখন ওইসব ট্রাকে থাকে কাঁচামালগুলো পচন ধরতে শুরু করে। তাই বাধ্য হয়েই ট্রাকের ড্রাইভাররা চাঁদাবাজদের দাবীকৃত শর্ত (টাকা) দিতে বাধ্য হন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফেরিঘাট এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি নৌ-থানা থাকাবস্থায় কিভাবে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজী করে ? শুধু ইউসুফ পাটোয়ারী নয়, এখানে তার মত একাধিক লোক রয়েছে। তারা সেখানকার বিআইডব্লিউটিসি, ইলিশা ফাঁড়ি, নৌ-থানা, ফেরির কর্তাদের সাথে যোগ-সাজসের মাধ্যমেই এ কাজ করে থাকেন, যা এখন ওপেন সিক্রেট। সেখানকার লোকজন বলছেন, দেখেও না দেখার ভান করছেন বিআইডব্লিউটিসি, ইলিশা ফাঁড়ি, নৌ-থানার কর্মকর্তারা।
চাঁদাবাজীর অভিযোগের বিষয়ে ইউসুফ পাটোয়ারীর সাথে কথা বলতে চাইলে তাকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি বিধায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: গোলাম মোস্তফা বলেন, এই ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হব, সে যেই হোক। তারপরও বিষয়টি দেখাবো আমি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।