রক্ষক যখন ভক্ষক

বোরহানউদ্দিনে দলীলে সনাক্তকারী ছালেম আহমেদ পাটোয়ারী বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

রক্ষক যখন ভক্ষক


ভোলার বাণী রিপোর্ট ॥ রক্ষক যখন ভক্ষক হন তখন আর কি করার থাকে। দলীলে সনাক্তকারী ছালেম আহমেদ পাটোয়ারী বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের উদয়পুর রাস্তার মাথা এলাকায়।
সূত্রে জানা যায়, বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের উদয়পুর রাস্তার মাথা এলাকার শাহে আলম মিয়া তার জামাই মুনছুর আহমেদ এর কাছে অত্র এলাকায় বিগত ০৪/০২/২০০৯ সালে ২৯১ নং দলিলে ২টি দোকান বিক্রি করেন। যার এসএ দাগ নং-৫৮১, খতিয়ান-৮৯ হালে বিএস খতিয়ান-১৭১৯ দাগ-১০৯৫, জেএল ৪৫। ওই দোকান বিক্রি করার সময় পার্শ্ববর্তী ছালেম আহমেদ পাটোয়ারী, পিতা-মজিবল হক, ৩নং ওয়ার্ড, টবগী-কে দলীল রেজিষ্ট্রি করার দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি মুনছুর আহমেদ এর নামে ২টি দোকান জমিসহ দলীল রেজিষ্ট্রি করে দেন এবং তিনি নিজেই ওই দলীলের লেখক ও সনাক্তকারী হন। পরবর্তীতে তিনি-ই এই ২টি দোকান স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে মেপে মুনছুর আহমদেকে বুঝিয়ে দেন।
পরবর্তীতে ওই জমির দাম বেড়ে গেলে ছালেম আহমেদ পাটোয়ারী দোকান দখলের পায়তারা করেন। স্থানীয় লোকজনের বাঁধার কারণে তিনি আর দোকান দখল করতে না পেরে ৪টি দলীল করেন। যথাক্রমে হাজী আব্দুস সালামের কাছ থেকে ১৪/০৬/১৯৯৫ইং তারিখে ২৫০৮ দলিলে ০.৭৫ শতাংশ, ১২/০৮/২০০৩ইং সালে ২৮৫১ দলিলে ০.৫০ শতাংশ এবং ০৩/১২/২০০৬ইং তারিখে ৪০১৪ দলিলে ০.২৭ শতাংশ এবং ২৮/০৮/২০০৬ইং মোঃ সামছুল হক এর কাছে থেকে ১৯৯৬ দলিলে ০.৩৬ শতাংশ দলিল করেন। যার দাগ নং-৫৮০, ৫৮১, ৫৮২। কিন্তু উক্ত ভূমির চেয়েও তার দখলে। অন্যদিকে সামছুল হক ০.৩৬ শতাশ জমি ১৯৭০ সালে জেবল হক কালুর কাছে ২৭/০৫/১৯৭০ তারিখে ১৩১৯ দলিলে বিক্রি করে নিঃস্ব হন।
মুনছুর আহমেদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর কাছে ছালেম আহমেদ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দেন। যার রায় বিগত ২০১৪ সালে দেয়া হয়। কিন্তু ছালেম আহমেদ ওই রায়ও মানেন নি। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেখানেও তিনি হাজির না হয়ে কোর্ট থেকে জামিন নেন।
এই বিষয়টি নিয়ে ইউপি পরিষদ, থানা এবং স্থানীয়ভাবে ছালেম আহমেদ পাটোয়ারীকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে মুনছুর আহমেদ বাদী হয়ে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- দেওয়ানী-১৩৩/২১ ভোলা।
বিষয়টি নিয়ে মুনছুর আহমেদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এবং ছালেম পাটোয়ারী একই এলাকার ও পূর্ব পরিচিত। আমার শ্বশুরের কাছে থেকে ২টি দোকান ক্রয়ের সময় শ্বশুর নিজে ছালেম পাটোয়ারীর মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করে দেন। ওই জমি ছালেম পাটোয়ারী নিজেই মেপে দেন। তিনি আরো বলেন, আমার দোকানের উত্তর পাশেরটি ছালেম পাটোয়ারীর দোকান। সেই দোকান থেকে আমার দোকানের ১ফুট পরিমান ওয়াল ছিদ্র করে দোকান প্রবেশ করে দখরের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আত্মীয়-স্বজনের কারণে উনি ব্যর্থ হন। পরে জানতে পারি সামছুল হক এর কাছ থেকে ০.৩৬ শতাশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু সামছুল হক ১৯৭০ সালে জেবল হক কালুর কাছে ২৭/০৫/১৯৭০ তারিখে ১৩১৯ দলিলে বিক্রি করে নিঃস্ব হন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন, চেয়ারম্যান এবং থানায় একাধিকবার সালিশ মিমাংশার চেষ্টা করি। উনি কারো কথা শুনতে ও মানতে চান না। তাই সুফল না পেয়ে আমি আদালত করি। আদালত যে রায় দিবেন, আমি তা মেনে নেব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছালেম আহমেদ পাটোয়ারীর ছেলে সবুজ ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে চাকুরী করেন। তার ছেলের ক্ষমতার দোহাই দিয়ে তিনি এলাকায় জোর-জবরদস্তি করেন। তার এমন কর্মকান্ডের কারণে এলাকার লোকজন তাকে মানষিক রোগী বলেও মন্তব্য করেন।
ছালেম আহমেদ পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে। আদালত সে রায় দিবে আমি তা মেনে নেব। ছেলের দাপট দেখিয়ে এলাকায় এ ধরনের কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে ছালেম পাটোয়ারী তা অস্বীকার করেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।