দুটি হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে ভোলায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

আশরাফুল আলম সজিব ॥ ভোলার দৌলতখানের রাব্বি এবং লালমোহনের রওশন আরা হত্যার রহস্য উদঘাটন ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরামের উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে হত্যাকা-ের শিকার পরিবাররা জানায়, চলতি মাসের ২২ ফেব্রুয়ারি দৌলতখানের কিশোর গ্যাংয়ের হাতে রাব্বি (২২) নামের যুবককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অপরদিকে ২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফজলে করিম মেম্বার বাড়ীর শাহজাহানের স্ত্রীর বৃদ্ধা রওশন আরা (৬৫) কে পরিকল্পিতভাবে বসত ঘর থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে সেফটি ট্যাংকের ভিতর ফেলে রাখে। অনেক খোঁজাখুঁজির ৫দিন পর লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা সেফটি ট্যাংক থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনার ১ বছর পার হয়ে গেলেও পুলিশ হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। চিহ্নিত করতে পারেনি হত্যাকা-ের মূল হোতাদের। রাব্বি ও রওশন আরা এই দুটো হত্যাকা-ের ঘটনায় হত্যাকারীরা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা হত্যাকা- দুটোকেই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
দৌলতখানের রাব্বি হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি এ হত্যা কান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কিশোর গ্যায়ের সদস্যদের বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করে। রাব্বি হত্যায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মাহিদ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকলেও পুলিশ তাকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি। হত্যাকা- সংগঠিত হওয়ার পর মাহিদের পিতাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করে রাখলেও অজ্ঞাত কারনে ২দিন পর পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এদিকে প্রভাবশালীরা এটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বাদী পক্ষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে দৌলতখানের ছাত্র জনতা একত্র হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
লালমোহনের রওশন আরা হত্যাকান্ডের মামলার বাদী ছেলে শিহাব বলেন, আমার মা একজন গৃহিনী ছিলেন।কারো সাথে বিরোধ ছিল না। ৬৫ বছর বয়সের একজন বৃদ্ধা তাকে ঘর থেকে নিয়ে হত্যা করে সেফটি ট্যাংকিতে লুকিয়ে রাখে। দুর্গন্ধের মাধ্যমে ঘটনার ৫দিন পর তাকে উদ্ধার করি। ঘটনার এক বছর পার হেয়ে গেলেও খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও এখনও আসামীদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
মানববন্ধনে ভোলা জেলা হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম এর সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা আজ দুটো হত্যার (রাব্বি ও রওসন আরা) বিচারের দাবীতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেছি। আমরা চাই এক বছর আগে ও সম্প্রতি রাব্বি হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করা হোক। এ হত্যাকা-ের সম্পর্কে পুলিশ অবশ্যই জানে। কিশোর গ্যাং এর সাথে যারা জড়িত ও তাদের যারা লালন পালন করেন তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। মানববন্ধন শেষে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস্ ফোরাম নেতৃবৃন্দ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।