চেয়ারম্যান সাহেব গাছ কেটে নিয়ে গেছে : প্রধান শিক্ষক

ভোলার ভেলুমিয়ায় শত বছরের স্কুলের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

ভোলার বাণী রিপোর্ট ॥ ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের শত বছরের ৬৭নং চন্দ্র প্রসাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাট কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মাস্টারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তিনি স্কুলের ওই গাছ কেটে নেন।
সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩১ সালে স্থাপিত হয় ৬৭নং চন্দ্র প্রসাদ স্কুলটি। স্থানীয় মৌলভী আবু নোমান এর পরিবার স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেন। কিন্তু ওই পরিবারের কোন শিক্ষিত লোক না থাকার কারণে স্কুল পরিচালনা কমিটির কোন সদস্য বা সভাপতি পদে কাউকে রাখা সম্ভব হয়নি। এই সুযোগে প্রধান শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছেমত স্কুল পরিচালনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কাউকে জিজ্ঞাসা না করেই স্কুলের গাছগুলো কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
সরজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মাস্টার স্কুলের পিছনের দিক দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ করেন। ওই রাস্তা তৈরী করতে গিয়েই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগ-সাজসের মাধ্যমে স্কুলের ১১টি মেহগনি এবং ২টি রেইনট্রি গাছ কেটে ফেলে। ওই গাছগুলো পরবর্তীতে স্কুলের বর্তমান পরিচালনা কমিটির কাউকে না জানিয়ে গোপনে চেয়ারম্যানের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেয়া হয়।
স্কুলের জমি দাতা পরিবারের সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক যাহা খশি তাহাই করেন। গাছগুলো বিক্রি করার জন্য স্কুলের জমি মেপে ওই জমি সিএন্ডবি’র মধ্যে ঢুকিয়ে দেন এবং স্কুলের পিছনের যে রাস্তা হয়েছে তার মধ্যে ছেড়ে দেন, যাতে স্কুলের ওই গাছগুলো বিক্রি করতে সহজ হয়। বর্ষা মৌসূম এলেই স্কুলের মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এ সমস্যা সমাধান না করে স্কুলের গাছগুলো বিক্রির ধান্দায় ব্যাস্ত।


এদিকে জোরপূর্বক স্কুলের গাছ কাটার বিষয়ে জমি দাতা পরিবারের পক্ষে মৌলভী আবু নোমান গত ১৫ ফেব্রুয়ারী-২০২৪ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত, অপরাধী এবং সন্ত্রাসী লোক যাদের অভ্যাস মানুষের জমি জোরপূর্বক জবর দখল করা। তারাই বে-আইনীভাবে স্কুলের গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে। গাছগুলো কাটার সময় তিনি বাঁধা দিতে গেলে ভয়-ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন ওইসকল দুর্বৃত্তের দল। তাই মৌলভী আবু নোমান বিষয়টি প্রশাসনের কাছে সঠিক ও সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে সু-বিচার দাবী করেছেন।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, গাছ নিয়ে গেছে চেয়ারম্যান সাহেব। আমার কি করার আছে। গাছ কাটার আগে আমি স্কুলের জমি মাপি, তাতে ৪ শতাংশ কম পাই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত।
অভিযোগের বিষয়ে ভেলুমিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মাষ্টারের সাথে মোবাইল ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে আপনার সাথে পরে কথা বলবো বলে কলটি কেটে দেন। এরপর অন্তত আরো ঘণ্টা দুয়েক পর যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।