সরকারকে পদত্যাগে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিলো চরমোনাই পীর

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগের আলটিমেটামসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন। রেজাউল করীম বলেন, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করে ও জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে নিবন্ধিত এবং প্রতিনিধিত্বশীল আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের সমন্বয় গঠিত জাতীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে কারারুদ্ধ বিএনপি সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি ও রাষ্ট্রপতিকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে। দাবি না মানলে সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনরত বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এবং অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহের সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থন ঘোষণা করছে। সরকারের কাছে বার্তা দিতে চাই, ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন এবার হতে দেওয়া হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে যা খুশি তাই করতে দেওয়া হবে না।
সবার এক দফা, এক দাবি একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এই ন্যায্য দাবির পক্ষে দেশের আশি শতাংশ জনগণের সমর্থন রয়েছে। এর আগে সকাল দশটা থেকেই সমাবেশস্থলে দলে-দলে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা। সমাবেশস্থলের খোলা মাঠেই জুমার নামায আদায় করেন দলটির নেতাকর্মীরা। নামাযে ইমামতি করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। নামাযের পর শুরু হয় আনুষ্ঠানিক সমাবেশ।
সমাবেশে দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, সরকার দেশের মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। দেশে সামাজিক সাম্য নেই, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। এদেশের জনগণ সরকারের লুটেরা সিন্ডিকেটের নির্যাতনের শিকার। নিজেদের অধিকার দাবি করলে সরকার মানুষের ওপর নির্যাতন এবং গুলি চালাচ্ছে।


তিনি বলেন, আন্দোলন করে সরকারকে যদি নামানো না যায় তাহলে আমাদের মুক্তি মিলবে না। জনগণ এবার সরকারে জুলুমের জবাব দেবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে এবার নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। তাই যখনই আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে তখনই আমাদের রাজপথে নেমে আসতে হবে।
সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সকল বিরোধী মতকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ এবং আইন বিভাগকে ধ্বংস করেছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করেছে। বাংলাদেশেরংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে বিশ্বাস করে না, জনগণ তাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না। সরকার যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে সংলাপ ডেকে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনূস আহমেদ, উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল আউয়াল পীর সাহেব খুলনা, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, উপদেষ্টা মুফতি এসহাক মো. আবুল খায়ের, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি আমিনুলল ইসলাম প্রমুখ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।