সংবাদ সম্মেলনে জাফর তালুকদার

পাওনা টাকা চাওয়ায় ভোলায় ব্যবসায়ীর উপর হামলা ॥ চেক-স্ট্যাম্প ছিনতাই

ভোলার বাণী রিপোর্ট ॥ ভোলায় পাওনা টাকা চাওয়ায় জাফর তালুকদার নামের এক ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে হামলা চালায় অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন, মিজান হাওলাদার, মাকসুদ পাটোয়ারী ও নিরব হোসাইন স¤্রাট গংরা। সম্প্রতি জাফর তালুকদার ভোলা শহরের একটি অভিযাত হোটেলে সংবাদ সমম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা যায়, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলার হাট থানার বসিন্দা জাফর তালুকদার ব্যবসায়ীক কাজে ভোলা শহরের উকিল পাড়া ৭নং ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন, মিজান হাওলাদার, মাকসুদ পাটোয়ারী জাফরের বন্ধু। সাদ্দাম হোসেন একজন পল্লী বিদ্যুৎ এর ঠিকাদার। সাদ্দাম তার ব্যবসায়ীক পার্টনার হওয়ার জন্য জাফর তালুকদারকে প্রস্তাব করলে তিনি রাজি হন। তখন সাদ্দাম জাফরকে বলে পার্টনার হতে হলে তোমাকে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এতে জাফর রাজি হয়ে সাদ্দামকে এককালিন ১৫ লাখ টাকা প্রদান করে। জামানত হিসেবে সাদ্দামের নিজ নামের স্বাক্ষরিত একটি চেক এবং ১০০টাকা মূল্যের নন জুডিশিলয়ার স্ট্যাম্প জাফরকে প্রদান করে। এরপর ৩-৪ মাস অতিবাহিত হলে জাফর সাদ্দামকে বলে তুমি আমাকে পার্টনার হিসেবে আমাকে এখনও নেও নি এবং কোন প্রকার কাজও দেও না। তা হলে তুমি আমার টাকা আমাকে ফেরত দাও। এরপর বিভিন্ন দেন-দরবারের মাধ্যমে সাদ্দাম ২৪/১১/২০২২ তারিখে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে নগদ ৩ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আরো ৪ লাখ টাকা প্রদান করে। সর্বমোট সাদ্দাম জাফরকে ৭ লাখ টাকা প্রদান করে। কিন্তু বাকি আরো ৮ লাখ টাকা সাদ্দাম জাফরকে দেই দিচ্ছি বলে না দিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এরপর জাফর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি মোর্শেদ ও তরিকুল ইসলাম কায়েদ এর কাছে বিষয়টি অবহিত করেন। তারপর সাদ্দাম জাফরের বাকি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেন নাই।
আরো জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেন, মিজান হাওলাদার, মাকসুদ পাটোয়ারী তাদের বাসাও চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। সাদ্দাম হোসেন তার ব্যক্তিগত কাজে গত ২৩/০৮/২০২৩ তারিখে ভোলায় আসে। কাজ সারতে রাত বেশী হয়ে যাওয়ায় সাদ্দাম জাফরের ভাড়া বাসায় রাত্রী যাপন করে। রাত্রী যাপনের এক পর্যায়ে সাদ্দাম সু-কৌশলে জাফরের চাবি নিয়ে ওয়ার ড্রয়ারের তালা খুলে সেখানে থাকা সাদ্দামের নামিয় স্বাক্ষরিত চেক ও ১০০টাকা মূল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প চুরি করে খুব সকালে জাফরের রুম থেকে বের হয়ে যায়। সকালে জাফর ঘুম থেকে উঠে দেখে তার ওয়ার ড্রয়ারের তালা খোলা এবং কাপড়-চোপড় এলোমেলো এবং চেক আর স্ট্যাম্প না দেখতে পেয়ে সাদ্দামকে ফোন করে জাফর। তখন সাদ্দাম জাফরকে চেক ও স্ট্যাম্প দিবে না বলে এবং বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকিও প্রদান করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ সেপ্টেম্বর জাফর ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে রিকসা যোগে ভোলা সদর থেকে রওয়ানা দিয়ে বিকাল ৫টার সময় সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের পূর্ব চরকালী ১নং ওয়ার্ডস্থ খেয়াঘাট লঞ্চঘাটের আগে জামে মসজিদের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছা মাত্র সাদ্দাম ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা লাঠি-সোটা, লোহার রড নিয়ে জাফরের রিকসার গতি রোধ করে দাড়িয়ে তাকে মারধর করে। এতে জাফরের একটি চোখ আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় জাফরের ডাক-চিকৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসলে সাদ্দাম ও তার লোকজন ওই স্থান ত্যাগ করে। স্থানীয়রা জাফরকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসা নেয়ার সময় চিকিৎসকরা জাফরকে ঢাকায় গিয়ে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার কথা বলেন। এ ঘটনায় জাফরের বড় ভাই খোকন তালুকদার বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার মামলা নং-১২, তারিখ-০৭/০৯/২৩ইং। অন্যদিকে সাদ্দাম’রা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যে তথ্য উত্থাপন করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তারা (জাফর-খোকন)’রা সৃষ্ট সমস্যার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার কামনা করেছেন প্রশাসনের কাছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।