বরগুনায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগ এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ

এনজিও বিষয়ক প্রতিনিধি ॥ বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে বরগুনায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, আমশা, ডেঙ্গু রোগীও পাওয়া যাচ্ছে। অনেক জায়গায় এর সাথে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে প্রতি দিন। বর্ষা শুরু হওয়ার পর বাড়ির আশ পাশের ময়লা আবর্জনা সব কিছু বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল পুকরসহ নর্দমায় পড়ে পানি দূষিত করছে। এই পানি খালগুলি দিয়ে প্রবাহিত না হওয়ার কারণে আরো বেশি পরিমান পানি দূষিত হচ্ছে এবং রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বরগুনার এমন কোন ঘর নেই যেখানে জ্বর, সর্দি, আমাশা বা ডায়রিয়ার রোগী নাই। বরগুনায় অনেকগুলি খাল রয়েছে নদীতে পানি নামার জন্য এমন কি খনন করাও আছে। খালগুলি কুছুড়িপানাসহ অন্যান্য ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে পানি নামারমত কোন অবস্থা নাই। এই খালগুলি কিছু আছে কৃষি বিভাগের আওতায়, কিছু আছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। খালগুলি রক্ষণাবেক্ষণ বা পরিস্কার করার জন্য কোন প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নেয় না বা এগুলোর দিকে কেউ নজর দেয় না। আগে দেখতাম কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি বা টি আর দিয়ে এই কাজগুলো করানো হতো।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করলে তিনি বলেন, এই কাজগুলো আমাদের আওতায় পড়ে না। তিনি বলেন জনপ্রতিনিধিগণ বিষয়টির দিকে নজর দিলে সমস্যা সহজেই সমাধান হবে।
নাগরিক কমিটির সদস্যসহ বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি বলেন, আমার ব্যাক্তিগত উদ্যোগ ও ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট থেকে কিছু বরাদ্দ দিয়ে খালের কিছু অংশ পরিস্কার করেছি।
অন্যদিকে পৌরসভাগুলির ড্রেন নিয়মিত পরিস্কার না করার কারণে নিয়মিত পানি নামতে পারছে না। ড্রেনের অনেক জায়গায় পানি জমা হয়ে গন্ধ ছড়াচ্ছ এমনকি ডেঙ্গুর লার্ভাও তৈরি হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। সব দিক বিবেচনা করলে মনে হয় আমাদের দেশের মানুষ আমরা জানি কেমন হয়ে গেছি। আমরা কেউ নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি উদাশীন হয়ে গেছি।
জেলা প্রসাশক মহোদয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কোন একটি সভায় জেলা প্রসাশক মহোদয় বলেছিলেন, এনজিওরা পানি ও স্যানিটেশন নিয়ে এত কাজ করে তার পরও এত ডায়রিয়া রোগী কেন ? স্যারকে বিনয়ের সহিত বলবো এই কাজগুলি সকলের সমন্বিত উদ্যোগের কাজ। অনেকেই মনে করেন এবং দাবী রাখনে খাল/ড্রেন পরিস্কার করার বিষয়ে জন প্রতিনিধি এবং প্রসাশন নজর দিলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অপেক্ষা শুধু উদ্যোগ নেওয়ার।
সুশীল সমাজ ও নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি এ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস, হোসনেয়ারা চম্পা, মাহাবুব আলম, আবদুল খালেক বলেন এখন বর্ষা চলে এসেছে এলাকার কিছু অসাধু প্রভাবশালীর যোগসাজশে খালে বেহুন্ধীজাল বসিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিবে। তারা আরো বলেন, বর্তমানে বরগুনার বিভিন্ন ইউনিয়ন বা পৌরসভা এলাকায় যে খাল বা ড্রেন রয়েছে সেইগুলি নিজ নিজ দায়িত্বে পরিস্কার ও পানির প্রবাহ গতিশীল রাখার আহবান জানান এবং জনপ্রতিধি, উপজেলা ও জেলা প্রসাশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। খালের কিছু ছবি আছে দেখলে বুঝা যাবে না এগুলি যে খাল। অন্য দিকে খাল ভরাট করে ঘর তুলছে অনেকে। এমনই একটি ছবি ইটবাড়িয়া খালের লেমুয়া ও কোডনাড়িয়া অংশের।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।