সর্বশেষঃ

ভোলা কলেজের সোনালী দিন : পর্ব-০২

(গত পর্বের পর) : ভোলা কলেজের স্বর্ণ যুগ বলতে আমাদের দৃস্টিতে ১৯৬৫-১৯৭০ সাল। ফুটবল খেলা কলেজে প্রথম থেকেই ছিল। ভোলা কলেজে ১৯৬৬ সালের শুরতেই ক্রিকেট খেলা, হকি খেলা, ভলিবল খেলা শুরু হয়। আর এর অনুপ্রেরণার কর্নধার ছিলেন মিজানুর রহমান স্যার, সামসুল আলম স্যার। ক্রিকেটের সমস্ত সামগ্রীই কলেজ থেকে দেওয়া হতো, শীতের মৌসুমেই ক্রিকেটের প্রাকটিস চলতো। আমাদের প্রস্তুতি চলেছে আন্ত জেলা কলেজ ক্রিকেটে পার্টিসিপ্যান্টের জন্য। সে সময়ে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে প্রতি বছর ক্রিকেট খেলা হতো। আমাকে ও মনোয়ারকে একবার আম্পেয়ার মনোনিত করা হলো। শামসুল আলম স্যার আমাদের দুজনকে কাছে ডেকে বল্লেন দেখো, স্ট্যাম্প ভাংগা ছারা স্যারদের কিন্তু আউট করা যাবেনা, মনে থাকে যেনো। এরকম অনেক আনন্দঘন মুহুর্তের মধুর স্মৃতি এতো সল্প পরিসরে শেষ করা যাবেনা। আমরা দুই বছর মিজান স্যারের নেতৃত্বে আন্তঃকলেজ ক্রিকেট খেলতে বরিশালে গিয়েছিলাম। তৎকালীন সময়ে আউট ডোরগেমে প্রয়াত আনোয়ার হোসেন ভূইয়া পর পর তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, ১০০ মিটার দৌড়ে সেতো দৌড়াতো না মনে হতো উড়ে যাচ্ছে। পোল ভল্টে প্রথম পুরস্কার একেবারে বাধা ছিল আলমগীর ভাইয়ের। আমাদের ব্যাচের সবার কথা মনে নেই, বন্ধুরা ক্ষমা করে দিও, তবে যাদের কথা মনে আছে তাদের নাম উল্লেখ করতে চাই। অধীকাংশের সাথেই যোগাযোগ নেই, কোথায় আছে তাও জানিনা। কয়েকজন এরমধ্যেই ওপার চলে গেছে, সল্প কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ আছে। বন্ধুবর মনোয়ার, আলাউদ্দিন মুরাদ, আনোয়ার হোসেন, বজলুর রহমান, ফজলুর রহমান, ফরিদ আহমেদ, অরুন দে, তরুন দে, দিলপ কুমার নাগ (আমাদের মাঝে নাই), কালিপদ (আমাদের মাঝে নাই), জাহাঙ্গীর (আমাদের মাঝে নাই), আলাউদ্দিন (আমাদের মাঝে নাই), মোঃ মোস্তফা, আবদুল মালেক, শামসুল আলম, আলাল, দুলাল, ফারুক চৌধুরী, রাধেশ্যাম, শহজাহান, গিয়াস উদ্দিন সেন্টু (আমাদের মাঝে নাই), জাহাঙ্গীর সিকদার, বারেক সিকদার, মোঃ সুফিয়র রহমান ফারুক, ইফতেখার আহমেদ মনু (আমাদের মাঝে নাই), শাহজাহান (মাইক) আবদুল লতিফ, দেলোয়ার হোসেন, হাবিব দেওয়ান, রফিকুল ইসলাম জান্টু মিয়া, (আমাদের মাঝে নাই), মনিরুল ইসলাম (আমাদের মাঝে নাই), মোহাম্মদ লোকমান, মিলনকুমার রায়, গবিন্দ, গৌরাংগ, মোঃ ইয়ারুল, মোঃ রুহুল আমিন (আমাদের মাঝে নাই), মোঃ ইসমাঈল, বিন্দু দে, জেবুন নেসা, শেফালী রানী, ছবি দত্ত, দিপালী, সাজেদা বেগম, মাহমুদা বেগম, শামসুন্নাহার প্রমুখ।
আমাদের ব্যাচের বন্ধুবর বাসুদেব সরকার ও কালাচাদ কর্মকার ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে পাক হানাদার ও রাজাকারদের হাতে মৃত্যু বরন করেন। ভোলা কলেজের সাংস্কৃতিক অংগন ভরিয়ে রাখতো ফারুকুর রহমান, মাহে আলম, আনোয়ার ভূইয়ার সুললিত কন্ঠের গান, যা এখনো কানে এখনো অনুরণিত করে। নাটকে তখনও মেয়েদের চরিত্রে ছেলেরাই অভিনয় করতো। কমনরুমে টেবিল টেনিস, দাবা। প্রতি বছরই হয়েছে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ৬৮ সালের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আমি প্রথম হয়েছিলাম। আমাদের সময় ৭দিন ব্যাপি বিজ্ঞান ও বানিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জানিনা এরপর আর কখনো এধরণের মেলা ভোলা কলেজে হয়েছে কিনা। ঐ সময়ে ভোলা কলেজে ওয়াজ মাহফিল ও হয়েছিলো এবং তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান রেডিওর বিশিষ্ট ওলামা জনাব হেলাল উদ্দিন সাহেব। সে সময়ে ভোলা কলেজে স্বরস্বতী পুজাও অনুষ্ঠিত হয়

(চলবে——–)

 

মাহফুজুর  রহমান বাচ্চু

সাবেক শিক্ষার্থী

 ভোলা সরকারী কলেজ, ভোলা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।