লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো আবুল হোসেনের রাজত্ব

স্টাফ রিপোর্টার, লালমোহন ॥ ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) মো. আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের থেকে নানা কৌশলে তিনি অর্থ হাতিয়ে নেন। আবুল হোসেনের এমন কা-ে অতিষ্ঠ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্ট অনেকে। এছাড়া অনেক সময় নিজেকে স্থানীয় লোক দাবি করে ক্ষমতার দম্ভ দেখান স্যাকমো আবুল হোসেন। তার এমন আচারণে মনে হবে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ যেন তার নিজ রাজত্ব।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সম্প্রতি লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি তার ভাতিজা পায়ে আঘাত পাওয়ায় তাকে নিয়ে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। এরপর সেখানের চিকিৎসক এক্সরের মাধ্যমে পায়ে ফ্র্যাকচারের বিষয়টি নিশ্চিত হন। যার জন্য ওই শিশুর পায়ে প্লাস্টার করানোর দরকার হয়। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা স্যাকমো আবুল হোসেন চুক্তি করে আলী হোসেনের কাছ থেকে তার ভাতিজার পায়ের প্লাস্টার করানোর জন্য নগদ ছয়শত টাকা নেন। প্রতিবেদকের কাছে এ ঘটনার একটি ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে।
অন্যদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে কোনো রোগী আসলে তাদের সঙ্গেও আর্থিক চুক্তি করে সেলাইয়ের কাজ করেন স্যাকমো আবুল হোসেন। এছাড়া কোনো প্রকার ড্রেসিং করতেও চা পানের নামে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেন তিনি। তার দাবি না মানলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে অসাদাচরণের করেন আবুল হোসেন। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বহুদিনের। নানা অনিয়মের কারণে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে ইতোমধ্যেই কয়েকবার বদলি হতে হয়েছে। তবে অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে বদলির কয়েক মাসের মাথায় আবারও চলে আসেন লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এখানে তার ছত্রছায়ায় রয়েছে একটি সিন্ডিকেট।
এসব অভিযোগের বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) মো. আবুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ঘটনা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আগের চাইতে আমি এখন ৯০ পার্সেন্ট ভালো হয়ে গেছি। তাহলে আগে আপনি এ ধরনের অনিয়ম করতেন? এমন প্রশ্নের জবাব দেননি স্যাকমো আবুল হোসেন।
স্যাকমো আবুল হোসেনের এমন কর্মকা-ের বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, নিয়ম বর্হিভূতভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনো কর্মকর্তা বা স্টাফদের টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।