ভোলায় আরও কমল করোনা শনাক্তের হার

ভোলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। উপকূলীয় এ দ্বীপ জেলায় আরও কমেছে করোনা শনাক্তের হার কমছে। গত ২৪ ঘন্টায় ভোলায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছ ১ শতাংশে। যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। ভোলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, উপকূলীয় এ দ্বীপ জেলায় স্থাপিত করোনা ল্যাবে করোনা পরীক্ষার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৮ মাসের মধ্যে ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার সবচেয়ে কম।

শুরু থেকে করোনা ল্যাবে রোগী শনাক্তের হার ছিল ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। টানা প্রায় ১৮ মাস পর ভোলায় গত ২৪ ঘন্টায় ১ জন রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে করোনাতে শনাক্তের হার নেমে এসেছে মাত্র ১ শতাংশে।

রোববার ভোলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, গত ২৪ ঘন্টায় ৯৬ জনের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করে মাত্র ১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা করোনা পরীক্ষা শুরুর পর থেকে এটাই সর্বনিম্ম করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা। মৃত্যুও শুন্যের কোঠায়।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ ভোলায় করোনা ল্যাবে করোনা সংক্রমণ রোগীর পরীক্ষা শুরু হয়। শুরু থেকে এ জেলায় করোনা সংক্রমণ রোগীর সংখ্যা কম থাকলে পরে বেড়ে যায়। বেড়ে ৩০-৪০ থেকে এক পর্যায়ে শনাক্তের হার ৫০ শতাংশে পৌঁছে। সেখান থেকে গত ২৪ ঘন্টার রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা রোগী শনাক্তের হার সর্বনিম্মে ১ শতাংশে নেমে এসেছে।
আগের দিন শনিবার ৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার ১৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯১ জন। রোববার পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৭৭৩ জন। করোনায় এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়েছে ৬ হাজার ১৮০ জন। সুস্থ্যতার হার ৯১.২ শতাংশ।
করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে হলে মাস্ক পরিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে ভোলার সিভিল সার্জন ডাক্তার কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, ভোলায় করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমলেও সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী টানা ১৪ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নীচে হলে ধরে নেওয়া যায়, করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে। ভোলায় টানা ১৪ দিন পর্যন্ত করোনা শনাক্তের হার প্রায় ৫ শতাংশ। তবে, এ জেলার অনেক মানুষ এখনো মাস্ক পরেনা। আর যারা পরে তারা সঠিক নিয়মে পরে না। নাকমূখ সম্পূর্ণ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণ রোগীদের অনেকেই লক্ষ্মণ গোপন করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা করোনায় আক্রান্ত তারা নিয়মানুযায়ী ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে না থেকে আগেই বের হয়ে যাচ্ছে। তাই করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে অবশ্যই সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে। সচেতন হতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রচারনা বাড়াতে হবে। ইউনিয়ন কমিটির নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। সর্বোপরি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, মসজিদের ইমাম, শিক্ষকসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত লকডাউনের কারণেই আজ ভোলায় করোনার হার কমেছে। তাই, লকডাউনের মতোই সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।