সর্বশেষঃ

দৌলতখানে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে রুমে তালা বদ্ধ করে নির্যাতন

দৌলতখান উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে লিমা বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূকে রুমে তালা বদ্ধ করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছ । এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ দৌলতখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। গৃহবধূ লিমার পরিবার স্বজনরা জানান , ২০১৫ সালের শেষ দিকে উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হারুনের ছেলে লিটনের সঙ্গে দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বশির মিঝির মেয়ে লিমা বেগমের পারিবারিক সম্মতিতে বিবাহ হয়। বর্তমানে তাঁদের তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পরিবারের সুখ ও অধিক সচ্ছলতার আশায় বিয়ের বছর খানেক পরেই বিদেশ যাবার সিন্ধান্ত নেয় লিমার স্বামী লিটন। ঐ সময় বাপের বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা ধার করে স্বামীকে দুবাই যেতে সহযোগীতা করেন লিমা। কিন্তু দুবাই থেকে ফেরার পর চেহারা পাল্টে যায় লিটনের। শুরু হয় লিমার প্রতি ধারবাহিক নির্যাতন। ৩ বছরের মেয়ের দিকে তাকিয়ে সংসার টিকাতে গিয়ে সেই নির্যাতনকে চুপিসারে মেনেই যাচ্ছিল লিমা। নিরুপায় হয়ে ৬ মাস পূর্বে ভোলা কোর্টে মামলা করে লিমা। সে সময় অভিযুক্ত লিটন আর নির্যাতন করবে না বলে মুচলেকা দিলে সংসার বাচাতে লিমাও স্বামীর বাড়ি চলে যায়। কিন্ত কিছুদিন পর ফের নির্যাতন চালায় লিমার ওপর। গত পহেলা ডিসেম্বর লিটন ও তাঁর পরিবারের লোকজন লিমাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। লিমা বিভিন্ন সময় তাঁর বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতেন। সম্প্রতি লিটন ও তাঁর পরিবারের লোকজন আবার ৭০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে লিমা অস্বীকৃতি জানালে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। এ সময় হাতের কাছে থাকা লাকড়ি দিয়ে আঘাত করে লিমার মাথা ফাটিয়ে দেন স্বামী লিটন। পরে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে ৮টি সেলাই করিয়ে আনা হয় বাসায়। লিমার পরিবার যাতে জানতে না পারে সেই কারনে একটি রুমে ৩ দিন তালা বদ্ধ করে রাখা হয়। পরে প্রতিবেশিদের কাছ থেকে খবর পেয়ে লিমার মা মেয়েকে দেখতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে সন্তান কে বাচাতে চট্রগ্রাম থেকে ছুটে আসে লিমার দিনমুজুর পিতা। বিভিন্ন ভাবে সমঝোতার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দৌলতখান থানায় অভিযোগ দিলে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)বজলার রহমানের নির্দেশে তৎক্ষনিক ভাবে পুলিশ লিমাকে উদ্ধার করে দৌলতখান স্বাস্থ্য কম্লেক্সে ভর্তি করে। তবে গৃহবধূ লিমাকে নির্যাতনের ঘটনায় গা ডাকা দিয়েছেন স্বামী লিটন সহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’ দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চিকিৎসক সালাম বলেন, ওই গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। তবে তাঁর স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।