যে-ই স্পর্শ করে সে-ই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।। আতঙ্কে অভিভাবক ও শিক্ষকরা।। ভোলা হাসপাতালে ২৯ শিক্ষার্থী ভর্তি

ইয়ামিন হোসেন : ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সময়ে এক শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তাকে সেবা দিতে গিয়ে আরো ২৯ শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়েছে। অথাৎ ওই ছাত্রকে যে-ই স্পর্শ করেছে সে-ই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। আজ সকাল ১১টার দিকে পশ্চিম ইলিশা ৪নং ওয়ার্ডে পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে অসুস্থ্য শিক্ষার্থীরা ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় পুরো শহর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।
পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিহাদ বলেন, গনিত স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছেন। হঠাৎ করে দেখলাম আমার মাথা ঘুরিয়ে পরে যাই। এমন ভাবে মাথা ব্যাথা উঠছে মনে হয়েছে চুলগুলো উঠিয়ে ফেলি। আমার এমন অবস্থা দেখে স্যাররা আমাকে লাইব্রেরীতে নিয়ে যায়। পরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে।
সিয়াম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমার সাথে একটা ছাত্র হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। তাকে ধরতে গিয়ে একে একে আমরা ৫০/৩০ জনের মত অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি।
ক্লাস শিক্ষক আবু ছাঈদ বলেন, আমি ক্লাস নিচ্ছি, এমন সময় জিহাদ অসুস্থ্য হলে তাকে অন্যদের ধরতে বলি। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখি যেই ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে ঘুরে পরে যায়। আমারও মাথা ঘুরেছে এবং চোঁখ দিয়ে হঠাৎ পানি পরা শুরু করেছে ।
আবু কালাম নামের এক অভিভাবক বলেন, স্কুল থেকে এক স্যারে বাড়ীতে ফোন দিয়ে বলেছে আমার ছেলে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। আমি খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি কেউ মাথা থাপ্পরাচ্ছে আর কেউ অজ্ঞান অবস্থায় আছে। যে ধরে সেই অসুস্থ্য হয়ে যায়। এখন এটা কি রোগ সেটা তো জানিনা।
দক্ষিণ চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, গনিত ক্লাসে হঠাৎ এক ছাত্র অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। আমরা বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করে তার বাবা মাকে খবর দিয়েছে এবং ওই ছাত্রকে প্রাথমিক সেবা দিচ্ছি এর মধ্যেই দেখি যারাই এ ছাত্রকে ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে পরে যায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। প্রধান শিক্ষক আরো জানান, স্কুল থেকে বাসায় গিয়েও অনেক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছ। তাদেরও নিয়ে আশা হচ্ছে।
ভোলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তায়েবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ২৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আরো আসছে। আমরা সবাই কে চিকিৎসা দিচ্ছি এবং কাউন্সিলর করছি। আশা করি দ্রুতই তারা সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।  শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কোনো রোগে আক্রান্ত হয়নি। তাদের দেখে মনে হচ্ছে আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সবাই এখন সুস্থ। ভয়ের কারণ নেই।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।