সর্বশেষঃ

চর কচুয়াখালীতে যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই

চরের মানুষের জীবন : পর্ব-১

জাহিদ দুলাল ॥ ভোলার লালমোহন উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চর কচুয়াখালী। প্রায় ৯০ বছর আগে উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া-আন্ধার মানিক নদীর বুকে জেঁগে উঠে চরটি। যেখানে বসতি শুরু হয় অন্তত পঞ্চাশ বছর আগে। বর্তমানে চর কচুয়াখালীতে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ সঙ্গী করে দিন পার করতে হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা ‘যাতায়াত ব্যবস্থা’। বেশ কয়েক বছর আগে মানুষজন নৌকায় চর কচুয়াখালীতে যাতায়াত করতেন। এখন যাতায়াতের বাহন খেয়া। চরে যাতায়াতের বাহনের কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি একটুও।
বর্তমানে লালমোহনের গজারিয়া এলাকার খালগোড়া ও পাশ্ববর্তী চরফ্যাশন উপজেলার বাংলাবাজার এলাকা থেকে চরের উদ্দেশ্যে নিয়মিত যাতায়াত করে দুইটি খেয়া। এই দুই খেয়াই চরের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাহন। খেয়া দিয়ে পারপার করতে গিয়ে প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন মানুষজন। দুই তীরের কোথায়ও নেই যাত্রীদের উঠা-নামার ঘাট। যার জন্য কখনো কোমড় সমান পানি, কখনো কাঁদা ডিঙিয়ে খেয়ায় উঠা-নামা করতে হচ্ছে মানুষজনকে।
বাংলাবাজার থেকে চর কচুয়াখালীতে নিয়মিত যাতায়াত করেন স্কুল শিক্ষক মো. জয়নুল আবেদিন। তিনি বলেন, দুর্গম চরের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমি। যার জন্য নিয়মিত এই খেয়াতে করে নদী পাড়ি দিয়ে চরে যাওয়া-আসা করতে হয়। প্রতিদিনই চর কচুয়াখালীতে খেয়া থেকে নামতে ও উঠতে গেলে কোমড় সমান পানি ও কাঁদা মাটি ডিঙাতে হয়। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় নিত্যদিন। আমার বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদেরও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
খেয়া দিয়ে পারাপারকারি গোয়াল মো. মিলন জানান, প্রতিদিন চর থেকে দুধ আনতে যেতে হয়। চরে কোনো ঘাট না থাকায় উঠতে-নামতে ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। কাঁদা আর পানি মাড়িয়ে নিত্যদিন আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়। তাই দুই পাড়েই মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ঘাট নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।


খেয়ার মাঝি মো. আনোয়ার ও আব্বাস বলেন, প্রতিদিন শতশত মানুষ তাদের প্রয়োজনে চরে যাচ্ছেন। কেউ আবার চর থেকে মূল-ভূখন্ডে আসছেন। খেয়ার জন্য দুই পাড়ের এক পাড়েও কোনো ঘাট না থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে দুই পাড়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘাট নির্মাণ খুবই জরুরি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, আমি সরেজমিনে ওই চর পরিদর্শন করেছি। ঘাটের জন্য সত্যিই মানুষজনকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। তাই মানুষজনের এ দুর্ভোগ লাঘবের জন্য চরে ঘাট স্থাপন করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে চরে খেয়া বেড়ানোর জন্য ঘাট স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।