সর্বশেষঃ

সরকারী চাকুরীজীবী হয়েও ভূয়া সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিদের ব্লাকমেইল করা মনিরের গল্প : পর্ব-০১

(অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম ওরফে ফুটন্ত মনির)

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পেশায় সরকারের তৃতীয় শ্রেণীর একজন কর্মচারী। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই)। দায়িত্ব মাঠ পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কাজ করা। বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সঠিক মতো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করেছে কি না, না করলে কিভাবে সাধারণ মানুষ পরিকল্পিত পরিবার পদ্ধতি গ্রহণ করে সুখে থাকবেন সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করা। কিন্তু তা না করে তিনি গোটা দেশ উদ্ধার করে চলছেন। কখনো সমাজ সেবক, কখনো আইনজীবী, কখনো সাংবাদিক, কখনো বা সমাজের মাথা হয়ে সামাজিক সমসা সমাধানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অথচ যে দায়িত্বটুকু পালন করে বেতনটা হালাল করার কথা, সেটা ঠিকমতো পালন করছেন না। নিজ দায়িত্ব ফেলে রেখে সমাজের দায়িত্বের বোঝা গ্রহণ করছেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে সমাজের দায়িত্ব পালন তার কাজ না, মূল কাজ হচ্ছে ধান্ধবাজি। শহরের ক্রীড়া অফিস, শিক্ষা অফিস, উপজেলা, সমাজসেবা অফিস কিংবা অন্যান্য অফিসে তিনি সাংবাদিক নামে পরিচিত। সরকারী চাকুরী করে সাংবাদিকতা করা বে-আইনী হলেও তার কাছে এটা কোন অন্যায় নয়। এমনকি সরকার অনুমোদিত কোন পত্রিকার প্রতিনিধিও নন তিনি। নাম মাত্র ভুইফোঁড়, অন-অনুমোদিত নিউজ পোর্টালের পরিছয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ভোলার বিস্তীর্ণ এলাকা। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ভোলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরো জানা গেছে, ভোলার মনপুরা উপজেলার জামায়াতী এক পরিবারের সদস্য এই ভূয়া সাংবাদিক প্রথমে মনপুরায় চাকুরী নেন। পরবর্তীতে মনপুরায় নানান ঘটনার জন্ম দেয়ার কারণে সেখান থেকে মার খেয়ে ভোলা সদরে আসেন। ভোলাতেও এখন এমন কর্মকান্ড করছেন যাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন। নামে, বে-নামে বিভিন্ন দপ্তরে ফোন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরক্ত এবং বিব্রত করছেন।
সম্প্রতি তিনি ভেদুরিয়ার এক শিক্ষককে চ্যানেল-সিক্স এর সাংবাদিক পরিচয়ে ফোন করে অসদাচরণ করেন। নিজের নাম গোপন রেখে জাভেদ পরিচয় দেন। এতে জাভেদ মাহমুদ নামের প্রকৃত ব্যক্তি বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। বিষয়টি গত ২দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যোগাযোগ মাধ্যমে নেটে ভাইরাল হওয়া তার অডিওটি মুছে ফেলার জন্য তিনি নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়ে এখন একশ্রেণীর টাউট, বাটপার, চোরা কারবারী, জলদস্যু ও মোনাফেকদের নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এছাড়া আনন্দ পাঠশালা নামে একটি জামায়াতী প্রতিষ্ঠানের হয়েও এই মনির বিভিন্ন স্কুলের কোমলমতি শিশুদের মাঝে জামায়াতী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার ধান্ধাবাজি এবং মিথ্যাচারের কারণে তিনি ভোলা এবং মনপুরায় একাধিকবার লাঞ্ছিত হয়েছেন। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হলেও কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত বিশেষ কারণে নিরব ভূমিকায় রয়েছেন।
মনিরুল ইসলাম নামের ঐ ব্যক্তি পরিচার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মরত। এ ব্যাপারে তার জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ভোলার উপ-পরিচালক তাপস জানান, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

প্রিয় পাঠক, আগামী সংখ্যায় মনিরের একাধিক বিয়ের ঘটনাবলি নিয়ে থাকছে আরো তথ্যবহুল রিপোর্ট। আপনারা আমাদের সাথেই থাকুন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।