মধ্যরাত : ১৮২

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : সন্ধ্যা হয়ে এল, সন্ধ্যার দিকে কুসুম ও আকাশ চৌধুরী ফোন করল তারাও আমাদের সাথে যাচ্ছে। বেশ মজা হবে। দল বেঁধে গেলে কিন্তু বড় আমোদ লাগে। সত্যি এবারের ডিজনী ভ্রমণ আমাদের রেকর্ড হয়ে থাকবে। সুশান্ত তখন টিভি দেখছিল। বলল কিরে প্রশান্ত কি রেকর্ড হয়ে থাকবে ? আমি বললাম, জানিস আকাশ চৌধুরী ও কুসুম চৌধুরী ওরা দু’জনেরই আমাদের সাথে ডিজনী যাচ্ছে। বাঃ ভারি জমা হবে। ঠিকই বলেছিস, সুশান্ত বলল তোর শরীর ভাল-ত ? আমি বললাম, শরীরের চিন্তা করা আমি একদম ছেড়ে দিয়েছি। তোরা সাথে আছিস, আর ভগবান যা করেন।
তার পরের দিন সঙ্গে নেওয়ার জন্য টুকিটাকি ওটা সেটা কিনলাম। ডোরা উমা দু’জনেও ওদের পছন্দ মত লোভনীয় অনেক কিছু কেনাকাটা করল। দুটো গাড়ী যাচ্ছে মানুষ মাত্র ৮জন। মন্দনা দল। দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার কথা একদম ভুলেই বসেছিলাম। উমা বলল, কি প্রশান্ত দাদা খাবেন না ? না ডিজনী গেলেই পেট ভরবে। আরে ভাল কথা আজত খাওয়াই হয়নি। আজ মাছের ঝোল নিরামিস ডাল দিয়ে দুটো ভাত জানি বড় ভালো। লাগল রাতে জানি শরীরটা ভাল লাগছিল না, মাথাটা ভীষণ ধরেছে। শুয়েই থাকলাম, উমা রাতে দুধ ব্রেড খেয়ে যেতে ডাকছিল। এসে খেয়ে গিয়ে শুয়ে পরলাম। খুব ভোরে আবার ডিজনী যাওয়ার প্রোগ্রাম। দোলা ফোন করল দাদু আমরা ব্রেক ফাষ্ট করেই তোমাদের ওখানে এসে পড়ব, তুমি ভাল করে বিশ্রাম করে নেও, ঘুমুতে চেষ্টা করো। তোমার প্রেসারের ঔষধটা ঠিকমত সঙ্গে নেবে। তোমার পথের খাওয়ার জিনিস টুকিটাকি আমার সাথেই আছে। তুমি চিন্তা করো না।
দোলার ফোন পেয়ে মনে হল দোলার আমার কথা চিন্তা করে। যখন মন্ট্রিলে ফিরে যাবার কথা মনে পড়ে। আমার সেই নিঃসঙ্গ জীবন। সেই ভার্সিটি আর আমার এপার্টমেন্ট, আর কমনরুমে, এই ভাবেই হয়তঃ জীবনটা কেটে যাবে। দুঃখ করে আর কি হবে। ভবিতব্য হয়তঃ জীবনটা আমার এইভাবে নেবেন। অনেকদিন হয় দেশ থেকে বড়দির কোন চিঠি পাইনি। মধ্য রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘড়ির ক্রিং ক্রিং শব্দে আমি বিরক্ত মনে উঠে পরে, ড্রইং রুমের বড় কাঁচের জানালাটার পাশে দাঁড়িয়ে জোৎ¯œায় প্লাবিত বিশ্ব প্রকৃতির পানে চেয়ে মুগ্ধ হলাম। বড় চাঁদটা দেখে যেন মনে হল এক খন্ড পোড়া রুটি। মানুষের দুঃখ-কষ্ট-ব্যথা বেদনা জর্জরিত জীবনের কাছে ঐ চাঁদ, ঐ খেতে বলেছি। আপনারা দুটো খাবেন। অমিয় বলল, আমরা কালকে ডিজনী পাড়ি জমাব। বিজন বলল, একদিনে কি হবে। মিস এত করে বলছেন। অমিয় চুপ করে থাকল। আমি বললাম, আমরাত যাব। চলুননা, একসাথে যাওয়া যাক পিকনিক পার্টিও মত হৈ-হুল্লোর করা যাবে। অনেকক্ষণ গল্প গুজব করা হল, মনে হল যেন আমি আবার সেই কঙ্ক্রোডিয়া ভার্সিটির কমন রুমে বসে গল্প করছি।

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।