সর্বশেষঃ

মেঘনা-তেঁতুলিয়ার ভাঙ্গনে নিঃস্ব ভোলার মানুষ

ইয়ামিন হোসেন ॥ মেঘনা-তেঁতুলিয়ার তীব্র ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে ভোলার মানচিত্র। প্রতি বছরই উজানের পানি বৃদ্ধি পেলেই শুরু হয় নদীর তা-ব। এতে বাড়ী, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে ভোলার নদীকূলের হাজার হাজার মানুষ। অসংখ্য মিয়া, ভুইয়া, হাওলাদার, জমাদার কে রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে এ মেঘনা-তেঁতুলিয়া।
বিলুপ্ত হয়ে নদীগর্ভে চলে গেছে কয়েকটি ইউনিয়ন ও গ্রাম। ভোলা সদর আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ এর প্রচেষ্টায় ইলিশা, কাচিয়া, ধনিয়া, শিবপুরে সিসি ব্লক ও রাজাপুর, ভেদুরিয়ার অংশে জিওব্যাগ দেওয়া হয়।
যে সব এলাকায় সিসি ব্লক বা জিওব্যাগ কিছুই দেওয়া হয়নি সেসব এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয় প্রতি বছর উজানের পানি বৃদ্ধি পেলেই। আবার জিওব্যাগ ও ধসে যাচ্ছে অনেক এলাকায়। রাজাপুরের জোরখাল ও শিবপুরের ভোলার খাল সংলগ্ম গিয়ে দেখা যায় মেঘনার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভেঙ্গে যাচ্ছে ফসলি জমি, বাড়ীঘর, মাছঘাট ও চায়না ইপিজেট এলাকা। একই অবস্থা ভেদুরিয়ার তেঁতুলিয়া নদীর। আতঙ্কে আছেন নদীকূলের বাসিন্দারা।
রাজাপুরের পল্লী চিকিৎসক আমির হোসেন বলেন, রাজাপুর ইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ মেঘনার গর্ভে চলে গেছে। এখন যে টুকু আছে তাও ঝুঁকিতে আছে। আমরা ঢাকা ও রাজাপুরে মানববন্ধন করেছি, নেতাদের জানিয়েছি। কাজের কাজ কিছুই হয়নি শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এসে পরিদর্শন আর আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে। রাজাপুরের বাসিন্দা জলিল মাষ্টার বলেন, বর্ষা কেবল শুরু, এখনই যাবে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আল্লাহই জানে কি হয়।
ভেদুরিয়ার বাসিন্দা মঞ্জু ইসলাম বলেন, তেঁতুলিয়ার ভাঙ্গনে যেমন মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে তেমনি ঝুঁকিতে আছে ব্যাংকেরহাট টেক্সটাইল কলেজ, মডেল মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পূর্ব ইলিশা বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ইলিশা ৩নং ওয়ার্ডের হাজিকান্দি ও ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ইলিশা এলাকায় সিসি ব্লক দেওয়া হয়নি তবে জিওব্যাগ দিলেও উজানের পানি বৃদ্ধি পেলে ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরো বলেন, এর আগেও দালালকান্দি এলাকা দিয়ে বেড়িবাঁধ ছুটে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে।
শিবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ ইউনুস বলেন, ভোলা শহরের সাথেই শীবপুর, এ ইউনিয়নে গত দুইদিন যে ভাবে মেঘনার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে এটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ভোলা শহর রক্ষাবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে শুধু শীবপুরের মানুষ নয় ভোলা শহরের মানুষ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভোলা যে একটি উন্নয়নের শহর, গ্রাসের শহর, বিদ্যুৎ এর শহর, এটা বিলিন হয়ে যাবে। তাই খুব দ্রুতই মেঘনার ভাঙ্গনরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভোলা সদর আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ এর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।