মধ্যরাত : পর্ব-১৫১

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম অনেক কথা। বড়দি’র কথা, দোলার বাবা-মা এদের কথা, দোলার নিজের লোক যারা কেহই কাছে নেই। ছোট দুটো ভাই তারাও দেখলনা। শুধু আমি সব দায় দায়িত্ব নিয়ে কচের হাতে সমর্পণ করতে যাচ্ছি। হে ভগবান তুমি আমার সহায় হও। হঠাৎ মাথা ভীষণ ধরেছে। জ্বর জ্বর ভাব নানা চিন্তা। নানা দায়িত্বে মাথা যেন আমার টনটন করছে। হাত-পা গুলো কাপছে। তবু সাহস করে উঠে বাথরুমে গেলাম, ¯œান করলাম। খেতে গেলাম। কিন্তু খেতে পারলাম না। উঠতে গিয়ে মাথা ঘুড়ে পরে যাচ্ছিলাম। দোলা ধরে ফেলল, উমা কিচেনে ছিল। দোলার ডাকে উমা, ডোরা আমাকে ধরে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল।

আমি চোখ বুজে ছিলাম। উমা কিচেনে আশির্বাদের জন্য কি মিষ্টি বানাচ্ছিল। দোলা আমার মাথার কাছে বসে কপালে হাত বুলাচ্ছিল। ডোরা আমাকে ঔষধ পথ্য কাছে বসে মুখে ধরে ধরে খাইয়ে দিচ্ছিল। জ্বর খুব বেড়ে যাচ্ছিল। দোলা বলল, দাদু সুশান্ত দাদুকে খবর দেব ? ফোন করব ? বললাম না, ও ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পরবে। দোলা বলল, খালি বলব জ্বর এসেছে। আচ্ছা কর। দোলা সুশান্তকে ফোন করার সাথে সাথে সুশান্ত ভার্সিটি থেকে এসে হাজির। সুশান্ত বলল, কি রে প্রশান্ত আমি কালকে বলেছিলাম না যে তোর আবার প্রেসার বেড়ে যাবে। প্রেসার বাড়লেইত তোর আবার জ্বর আসে। এখন কাল কচের আশির্বাদের পালা। তুই পড়ে থাকলে আমি একা কোনদিক সামলাবো।
ডোরা এগিয়ে এসে আমার সামনে সুশান্তকে বলল, আপনি কোন চিন্তা করবেন না। আমিত রয়েছি, শুধু মন্ট্রিলের ম্যাপটা আমাকে দেবেন। আর গাড়ীর লাইসেন্সও আমার আছে। উমাদি আপনি সকল আনুষ্ঠানিক কাজ গুলি সেরে ফেলুন। সুশান্ত কতক্ষণের জন্য ডোরার মুখের পানে চেয়ে থাকল, তারপর বলল, প্রশান্ত চল ডাক্তারের কাছে যাই। উমা দোলা বাড়ীতে থাকল। সুশান্ত আমি ডোরা ডাক্তারের চেম্বারে গেলাম। জ্বর চার এর ঘরে, প্রেসার খুব বেড়েছে। ডাক্তার পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছে। সুশান্ত গাড়ী ড্রাইভ করে আমাকে বাসায় নিয়ে এল। আমি অতি কষ্টে হাটতে গিয়েও যেন হাটতে পারিনা। বিছানায় এলাম সুশান্ত গাড়ীর কি যেন চেক করছিল। বিছানায় শুয়ে কতক্ষণ দম নিলাম। দোলা আমার কাছে বসল, দাদু তোমার কেমন লাগছে। আমি দোলার মাথা রেখে কতক্ষণ কাঁদালাম।

(চলবে——)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।