মধ্যরাত : পর্ব-১৪৩

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : সুশান্ত চুপকরে থেকে কাগজটা হাতে খবরগুলো দেখে যাচ্ছিল। আমিও চুপ করে আমার হাতের ঘড়িটার বেল্টটা খুলছি আর আটকাচ্ছি। কচ হাতের রিংটা একবার খুলছে একবার পড়ছে। উমা নিমক পাড়া চা করে আমাকে কচকে সুশান্তকে খেতে দিল। সুশান্ত উমাকে বলল, উমা ঘরে কোন মিষ্টি নেই ? উমা বলল, না। আমাকে বলনি কেন ? বলল ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে ডোনাট নিয়ে আসতাম, ডালমুট আনতাম। আমাকে ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় মনে করিয়ে দেবে।
উমা নীরবে চলে গেল কোন উচ্য-বাচ্য করলনা। কচ কোন কিচুই খেলনা, শুধু এদিক-ওদিক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল। আর বার বার আমার চোখের পর চোখ রাখছিল। আমি বললাম, কচ কিছু মুখে দাও। ও দু’একটি নিমক পাড়া মুখে তুলে তুলে দিচ্ছিল। সুশান্ত বলল, কচ তোমার দাদা বাড়ী আছেন ? কচ বলল, হ্যাঁ কোন দরকার আছে দাদার কাছে আপনার ? সুশান্ত বলল, খুবই প্রয়োজনীয় কথা বলার আছে। সুশান্ত জুতোটা বদলে বেড়িয়ে গেল। আমি জিজ্ঞাসাও করলাম না কোথায় যাচ্ছিস। কচ কি যেন ভাবল, আস্তে আস্তে বলল দাদু দোলা কই ? দোলা ঘরের মধ্যে কি যেন কাজ করছিল। আমি ডাকলাম দোলা, দোলা উত্তর দিলনা। দরজার কাছে এগিয়ে এসে পর্দা ফাঁক করে চেয়ে দেখল। আমার দিকে চেয়ে নিরব ইঙ্গিতে জিজ্ঞাসা করল কি ? আমি বললাম কচ তোকে ডাকছে। দোলা লজ্জা পেয়ে চলে গেল।
আমি বললাম, ও তোমার কাছে আসতে লজ্জা পায়। কচ বলল, কিসের লজ্জা ? তবু দোলাকে আবার ডাকলাম। দোলা আমার চা দাও। আর এখানে এস বস, গল্প কর। উমা-উমা। উমা এসে উপস্থিত। দোলাকে নিয়ে এখানে এসে বস গল্প কর। আমি দোলাকে ডাকলাম, ও ত লজ্জা পায় আসতেই পারে না। এই বিংশ শতাব্দির যুগের মেয়েরা আগের যুগের মেয়েদের মত কুসংস্কারপূর্ণ মন নিয়ে চললে ত হবে না ? তাকে উচ্ছমনা হতে হবে। মনের সব জঞ্চাল, গলদ, অন্ধকারাচ্ছন্ন মন দূর করে দিয়ে, নবীন দিনের নবীন আশার মঞ্জুরী সৃষ্টি করতে হবে।
উমা বলল, ইস্ নাতনীর জন্য মুখে প্রশান্ত দার খৈ ফুটছে। আমি বললাম, আমি দাদু আমি রসনা না জোগালে কে জোগাবে ? তুমি ত বৌদি। তোমারও অংশ গ্রহণ করতে হবে। তুমিও দেখছি লজ্জা পাও। উমা দোলাকে নিয়ে এসে কচের কাছে বসল। কচ বলল, কি দোলা এত লজ্জা পাচ্ছ কেন ? এইত কদিন আগেইত আমার কাছে বাজনা শিখলে, কই তোমার গীটার বেহালা ? আন বাজাই। দোলা লজ্জায় মাথা নীচু করে থাকে। উমা বলল, ইস্ মাছ ভাজটিও উল্টিয়ে খেতে জানেনা। কচের সাথে যে দেবযানীর আর্শিবাদ হয়ে যাবে, বিয়ে ঠিক হয়েছে। কচ বাবু যেন কিছুই জানে না। তিনি ডুবে ডুবে জল খান। আমরা বুঝি আর জানি না, মনে করেন।

 (চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।