সর্বশেষঃ

ভোলায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

ভোলা সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনিই গড়ে অন্ততঃ ২-৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোমবার সকালে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভোলা জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য রোগীর সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীও চিকিৎসা নিচ্ছেন।এ ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগেই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিন জন ডেঙ্গু রোগী। পাশের ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন আরও দুই জন ডেঙ্গু রোগী। তাদেরকে মশারির ভেতরে রেখে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভোলা সরকারি কলেজের ভূগোল বিষয়ের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মনিরুল ইসলাম জানান, তার বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নে।
মনির জানান, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ভোলায় আসার পর শনিবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। ওই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত গোবিন্দ্রের বাসা ভোলা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর বাপ্তা গ্রামে। গোবিন্দ্র জানান, গত ২-৩ দিন আগে থেকে জ্বরে আক্রান্ত হলে গত রোববার ভোলা সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্টাফ নার্স বাসন্তী জানান, এ হাসপাতালে অন্যান্য রোগীর সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিনি গড়ে প্রায় ২-৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।


ভোলা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধয়াক ডা. লোকমান হাকিম ভোলার বাণী’কে বলেন, হাসপাতালে অন্যান্য রোগীর সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তিনি বলেন, সোমবার এ হাসপাতালে মোট ৩৭৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৬ জন। তবে, আমরা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য ওষুধের কোন সংকট নেই বলেও জানান তিনি। আবহাওয়া পরিবর্তন এবং ঢাকা থেকে আগত মানুষ থেকে এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি ডেঙ্গু বিস্তার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলছেন সচেতনমহল।
এছাড়াও ভোলার বিভিন্ন উপজেলায়ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শোভন কুমার বসাক বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায়ও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। তবে, কতজন রোগী ভর্তি হয়েছেন সে বিষয়ে এই মুহূর্তে বলতে পারছেন না। তবে, ভোলা সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, ভোলা সদর হাসপাতালে ৫ জন ও চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ রোধে ভোলা পৌরসভা মশা নিধনে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ভোলা পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর মোঃ ফারুক বলেন, ডেঙ্গুর সংক্রমণ রোধে ভোলা পৌরসভা মশা নিধনে কাজ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তার ব্যস্ততার কারণে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। এ ছাড়া প্রধান নির্বাহী ভোলায় ছিলেননা। তিনি আজ ভোলায় এসেছেন। আমাদের কাছে কিছু ওষুধ আছে। আরও ওষুধ এনে পৌরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটিয়ে খুব শিগগিরই মশা নিধনে কাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে ভোলা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।