সর্বশেষঃ

লুন্ঠিত স্বর্নালংকার উদ্ধার

ভোলায় চাঞ্চল্যকর জয়তুন বিবি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, ৫ আসামী গ্রেফতার

ভোলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর জয়তুন বিবি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের পরপরই ভোলা সদর মডেল থানায় মামলা হওয়ার পর থেকেই পুলিশ তদন্তে নামে। হত্যাকান্ডের ২দিনের মাথায় রহস্য এবং ৫ আসামীকে শুক্রবার (১৫ জুলাই) ভোর রাতে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে ভোলা জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, হত্যাকান্ডের পরপরই ভোলা সদর থানায় মামলা হলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম) এর দিক-নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার এর তদারকিতে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশ ব্যাপক তদন্ত শুরু করে এবং হত্যাকা-ের ২ দিনের মধ্যেই এস.আই গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে সদর থানার একটি টিম শুক্রবার (১৫ জুলাই) ভোর রাতে ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ আসামীকে গ্রেফতার করা হয় এবং জয়তুন বিবি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতরা হল- হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী কাবিল (৬৫), হাবিলের ছেলে সোহেল (৩০), সোহেলের স্ত্রী নাজমা (২৬) এবং ভাড়াটিয়া দুই খুনি মান্নান (৩২) এবং তার সহযোগী রবিউল (৩০)।

গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম জয়তুন বিবির (৬০) বসত ঘরে কাবিল মেম্বারের (যার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষন, চাঁদাবাজি সহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে) আসা যাওয়া ছিল এবং ভিকটিম জয়তুন বিবির গৃহে থাকা স্বর্নালংকার ও টাকা-পয়সা সম্পর্কে জানত সে। ওই স^র্নালংকার ও টাকা পয়সার প্রতি লোভের বশবর্তি হয়ে গত ১৫ (পনের) দিন পূর্বে কাবিল মেম্বার তার ছেলে আসামী সোহেল ও তার স্ত্রী নাজমাকে ভাড়াটিয়া হিসেবে পরিকল্পিত ভাবে ভিকটিমের বাসায় পাঠায়। ভিকটিমের স্বর্নালংকার ও টাকা আত্মসাৎ করার জন্য কাবিল মেম্বারের পরামর্শ অনুযায়ী আসামী সোহেল আরো ২ জন আসামী মান্নান ও রবিউলকে ভাড়া করে। ঘটনার দিন কাবিল মেম্বার সোহেলকে ভাড়া করা মান্নান ও রবিউলকে ভিকটিমের বাড়ীতে নিয়া আসার জন্য বলে। ঘটনার দিন (১০ জুলাই) সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টার দিকে আসামী কাবিল, সোহেল ও নাজমা বেগম ভিকটিমের বাসার ভিতর যেয়ে ভিকটিমের হাত, পা ও মুখ ওড়না দিয়া বেধে ফেলে। আসামী মান্নান ও রবিউল ভিকটিমের গৃহে প্রবেশ করে এবং ভিকটিম ছটফট করিলে মান্নান ও রবিউল ভিকটিমের হাত পা চেপে ধরে। আসামী কাবিল ও সোহেল এবং নাজমা ভিকটিমের পড়নে থাকা স্বর্নালংকার ও ঘরের শোকেজ ও আলমীরা ভেঙ্গে নগদ ২০ হাজার টাকা অর্থ নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত সোহেল এর স্বীকারোক্তি মোতাবেক ভিকটিমের ব্যবহৃত ১ (এক) ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন উদ্ধার এবং আসামী অটো গাড়ীর ড্রাইভার রবিউল এর নিকট হইতে আত্মসাৎকৃত নগদ ২ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দপূর্বক রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফরহাদ সরদার জানান, জয়তুন বিবিকে হত্যা করে তার গলার হার আসামি সোহেল ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম বিক্রি করেছে শহরের একটি স্বর্ণের দোকানে। ওই দোকানের সিসি টিভির ফুটেজও উদ্ধার করা হয়েছে। এ থেকে হত্যাকা-ে আসামিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। মামলার আলামত হিসেবে একটি স্বর্ণের চেইন, নগদ ২ হাজার টাকা এবং ৫টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভোলা থানার ওসি এনায়েত হোসেন, তদন্ত ওসি আরমান হোসেন, ডি,আই,ওয়ান জাকির হোসেন, মামলার আইও এসআই মোস্তফা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই বিকাল ৪টার সময় (ঈদ উল আযহার) পরের দিন ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জপট্টি গ্রামের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকারের লোভে জয়তুন বিবির নামের ওই নারীকে হত্যা করা হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।