ভোলার সঙ্গীত গুরু দক্ষিণা মজুমদারের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ভোলার বিশিষ্ট সঙ্গিত গুরু এ্যাডভোকেট দক্ষিণা রঞ্জন মজুমদারের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের ৫ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।দিনটি উপলক্ষে শনিবার তার নিজ বাসভবনে ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এতে তার আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। দক্ষিণা রঞ্জন মজুমদার ছিলেন একাধারে শিক্ষক, আইনজীবি, সংগঠক, গায়ক, সঙ্গিত গুরু ও গীতিকার।
জন্ম তজুমদ্দিনের উপজেলার শম্ভুগোলকপুর হলেও দক্ষিণা রঞ্জন মজুমদারের স্কুল জীবন কাটে ভোলা শহরে। এরপর তিনি উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ছাত্র সংগ্রামে জড়িয়ে পরেন। ছাত্র অবস্থায় তিনি ভোলার শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে নিবীড়ভাবে যুক্ত হন। বিশেষ করে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তার দক্ষতা প্রকাশ পায়। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ভোলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করতেন। জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে পড়া শেষ না করে চলে আসলেও পরে তিনি ভোলা সরকারি কলেজ থেকে কমার্স বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে নব্বইয়ের দশকে আইন পেশায় যুক্ত হন। এর আগে তিনি ভোলা টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (বাংলা স্কুল) শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। শিক্ষক হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল।
এছাড়া তিনি ভোলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম-সম্পাদক ও স্বরলীপি সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি উদিচি শিল্পগোষ্ঠি ও দ্বীপাঞ্চল সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি এসময় ভোলার অন্যতম একজন সঙ্গীত গুরু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর আবার নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সংস্কৃতিকর্মীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি একজন সঙ্গীত শিল্পী ও আইনজীবি হিসেবে বেস সুনামের সহিত দিন অতিবাহিত করেন।
আজীবন সাংস্কৃতিমনা এই মানুষটি তার মেয়ে ইলা মজুমদার ও অনামিকা মজুমদারকে সঙ্গীত শিল্পী এবং ছেলে ভাস্কর মজুমদার কে একজন দক্ষ তবলা বাদক হিসেবে গড়ে তোলেন। পরবর্তিতে তারা ভোলার শিল্পাঙ্গনে যুক্ত হয়।
মেয়ে অনামিকা মজুমদার বরিশাল বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। এছাড়া সে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ও জেলা শিশু একাডেমীর সঙ্গীত প্রশিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করার পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমেরিকা পারি জমান। অপরদিকে ছেলে ভাস্কর মজুমদার জেলার অন্যতম তবলা বাদক হিসেবে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে কর্মের পাশাপাশি জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও শিশু একাডেমীর তবলা প্রশিক্ষক হিসেবে যুক্ত আছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।