সর্বশেষঃ

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এর পূনগঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে। এর সাথে তাল রেখে আমাদের সামাজে একটি উন্নত চিন্তা শক্তির অধিকারী একটি বিপ্লবী রাজনৈতিক শক্তির উপস্থিতি দরকার। কোথাও যেন আমাদের মধ্যে বাসনা না বেধে বসে আত্মতৃপ্তি। আর আমরা যেন জড়তা, স্থবিরতা, প্রচলিত প্রথা ও রীতি চিন্তাধারা সংর্কীন্ন মনোভাব প্রকৃতির আনুগত্য যেন আমরা বরণ করে না নেই। আমাদের উন্নয়ন, অগ্রগতির সাথে সাথে সমাজে আজ এক নতুন এলিট শ্রেণির সৃষ্টি হয়েছে। যারা আজ দল ও জনগনের উপর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক প্রভূত্ব বিস্তার করে চলছে। বিশ্ব পরিমন্ডলে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর সোভিয়েত রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত দেশ গুলোতে পার্টির ভিতর থেকে সুবিধা ভোগী এক কায়েমী স্বার্থবাদী শ্রেণি উদ্ভুত হওয়ার ফলে তারাই আজ জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে গিয়ে ক্ষমতাহীন হয়ে আস্থাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ঐ সকল দেশে সমাজতান্ত্রিক কমিউনিস্ট নীতি আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ প্রগতি ও উন্নয়নের পরিপূর্ণভাবে বিকাশ ঘটে নাই। এর মূল কারণ রাষ্ট্রীয় ও সমাজ ব্যবস্থার বিবর্তনের ফলে দীর্ঘ দিন একই দল ক্ষতায় থাকায় দলের নেতৃত্বের উদাশিনতা ও ব্যক্তি স্বার্থ সংরক্ষণ এর প্রবণতা তৈরী হওয়ায় এই রুপ ঘটেছে। এই সব দিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনা ও কর্মধারার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধির রুপকার জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশকেও নিজস্ব আদলে সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষে এমন একটি দেশ প্রেমিক জাতীগোষ্ঠী তৈরির জন্য একটি মেধাবী, বিজ্ঞানমনস্ক দেশ প্রেমিক নেতৃত্ব তৈরী করতে হবে। তৃণমূলের শাখা পর্যন্ত যারা কোন দিনই তাদের দেশ প্রেমিক চরিত্র বর্জন করবেনা। তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে কায়েমী স্বার্থ কোথাও যেন ঘাঁটি গাড়তে না পারে। আমরা যেন আমাদের বিরতিহীন চলার পথে ক্লান্তি বা মোহের কারনে মাঝ পাথে সিটকে না পরি বা ভেসে না যাই। সমাজ ও অগ্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিতে হলে বিপ্লবি নেতৃত্বে গড়ে উঠতে পারে বিপ্লবি চরিত্রকে কেন্দ্র করে।
অন্যদিকে বৈপ্লবিক চরিত্রের অধিকারী সে যে নিজের অন্ত:প্রকৃতি পর্যন্ত ক্রমাগত পরিবর্তন করে। আমরা জানি বাঙ্গালি প্রকৃতিগত ভাবে সব কাজের মধ্যে বৈশিষ্ট ও নতুনত্ব ভালোবাসে। জাতীর চালিকা শক্তিকে অক্ষুন্ন রাখতে হলে, জয়যাত্রা তথা আত্মবিকাশের পথে অগ্রগতিকে বহমান রাখতে হলে জনগণের স্বতস্ফুর্ততা দরকার। শুধুমাত্র সরকারি আমলাতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল না থেকে জনগনের সঙ্গে অভিন্ন হৃদয়ে নেতৃত্ব এর সমন্ধয়ে একটি দলীয় বৈপ্লবিক কাঠামো তৈরী করতে হবে। এই দল সকল ধরনের প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ এর মধ্যে ডুব দিয়ে থাকা, সাম্প্রদায়িকতা, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি যদি কোথাও ডুব দিয়ে থাকে তাকে প্রথমত সংশোধনের জন্য কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে দলের বহুমূখি বিভিন্ন শাখা প্রশাখার বিন্যস্ত কার্য্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা প্রদান করবে দলের কেন্দ্রিয় নেতৃত্ব। এছাড়া মূল দলের বাইরে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অভিজ্ঞ, বুদ্ধিজীবি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষক, প্রফেসর মধ্য থেকে দলের নীতি কৌশল নির্ধারন ও পরামর্শ এর জন্য থিংকটেংক গড়ে তুলতে হবে।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিকশিত প্রজ্ঞা সম্পন্ন নেতৃত্বে দেশে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যে পুর্নাঙ্গ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বিশেষ করে ভিশন ২০২০-২১ ও ৪১ সনের মধ্যে যে উন্নত দেশের পর্যায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বহুমূখি উন্নয় পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এবং সদুর প্রসারী অগ্রগতি ও উন্নয়ন সাধনের জন্য ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ সাল এর পরিকল্পনা হতে নেয়া হয়েছে তার থেকে অভিলম্বে কার্য্যকর করা যায় এমন প্রকল্প গুলি হাতে নিতে হবে। একটি বহুদুর প্রসারিত পরিকল্পনার বহু পর্যায় থাকতে পারে, এর থেকে ক্রম অনুযায়ী একটার পর একটা পর্যায় যেতে হলে আমাদেরকে অভিলম্বে দক্ষ, মেধাবী রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ করে দিতে হবে।
রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা রাজনীতিবীদদের, আমলা কর্মকর্তারা তা বাস্তবায়ন করবেন। রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প অন্য কিছু হতে পারে না। দীর্ঘ দিন দল ক্ষমতায় থাকার কারনে যেন দলের মধ্যে ব্যক্তি সুবিধাভোগী চরিত্রের নেতা গড়ে উঠতে না পারে সেই দিকে নজর রাখতে হবে সব সময়।
উদাহরণ হিসাবে আমি দেখি যে, সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পূর্ব ইউরোপ এর দেশ সমূহে রাজনৈতিক আমলাতন্ত্র এর মাধ্যমে একটি সুযোগ সন্ধানী এলিট শ্রেনি গড়ে উঠায় উক্ত দেশগুলিতে পার্টি জনগন থেকে বিছিন্ন হয়ে পরেছিল। একই অবস্থা দেখি আমাদের পাশের দেশ ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত রাজ্য সরকারের দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার পরিনতি সম্পর্কে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদেরকে দলীয় সাংগঠনিক কাঠামো দলীয় এমপি দের প্রভাব ও কর্তৃত্ব কমিয়ে আনতে হবে। এমপি’রা নিয়ন্ত্রিত হবে দলের সাংগঠনিক নেতৃত্ব এর মাধ্যমে তা হলেই জনমূখি দল গড়ে তোলা সম্ভব। অতীত অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করতে পারলেই বের হয়ে আসবে আমাদের গৃহিত কোন পথটি আমাদের জন্য সঠিক।

লেখক : ফজলুল কাদের মজনু
সভাপতি
ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।