হবিগঞ্জে সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে

দৌলতখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী’র মানববন্ধন

হবিগঞ্জ সদরের প্রধান সড়কে গত মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটায় এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ওই ব্যক্তি হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট ছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন সকালে ল্যাবে দুই তরুণের সঙ্গে “কোভিড-১৯” নমুনা সংগ্রহের দেরি হওয়ায় কথা-কাটাকাটি হয় তাঁর সাথে। এর জের ধরে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। শনিবার (১ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ভোলার দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডাক্তার, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ এক যোগাযোগে মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, মোঃ সাইফুল ইসলাম হবিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহামারী কারনাকালীন সময়ে সেবা দিয়ে গেছেন। যার ধারাবাহিকতা বর্তমান প্রর্যন্ত অব্যহত ছিলো। তার মতো এরকম দায়িত্বশীল টেকনোলজিস্ট এর নির্মম ভাবে হত্যা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ সময় তিনি আরো বলেন, সারা বাংলাদেশের সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একযোগ হয়ে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পক্ষ থেকে টেকনোলজিস্ট সাইফুল ইসলাম হত্যার উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য বিচার বিভাগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
নিহত স্বাস্থ্যকর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৮) মাধবপুর উপজেলার মনতলা গ্রামের বাসিন্দা। থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের ল্যাবে দুই ব্যক্তির সঙ্গে রক্ত পরীক্ষা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় সাইফুলের। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাঁদের শান্ত করেন ও পরিস্থিতি সামাল দেন। কিছুক্ষণ পর বেলা আড়াইটার দিকে সাইফুল ব্যক্তিগত কাজে শহরের খাজা গার্ডেনে (বিপণিবিতান) যান। সেখান থেকে কাজ শেষে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই তরুণ শহরের প্রধান সড়কের পাশে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় এলোপাতাড়ি লাঠির আঘাতে মাথায় চোট পান সাইফুল। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারী তরুণেরা সেখান থেকে পালিয়ে যান।
পরে আশপাশের লোকজন আহত অবস্থায় সাইফুলকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সিলেট নিয়ে যাওয়ার পথে বিকেল পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পাশাপাশি পুলিশ খাজা গার্ডেনের সিসি ক্যামেরা থেকে ঘটনার ভিডিও চিত্র সংগ্রহ করে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২০ সালে সাইফুল হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়োগ পান। তাঁর সহকর্মী ইমতিয়াজ তুহিন বলেন, চাকরির কারণে সাইফুল শহরের অনন্তপুর আবাসিক এলাকায় ভাড়া থাকতেন। হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী বলেন, সংগ্রহ করা সিসিটিভির ভিডিও থেকে অপরাধী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা গেছে। শিগগিরই তাঁদের আটক করা হবে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।