সর্বশেষঃ

বিচারের দাবীতে রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে হাজারো জনতার বিক্ষোভ

দৌলতখানে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতা, গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগ নেতা নিহত

ভোলার দৌলতখানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে খোরশেদ আলম টিটু (৩৫) নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। সে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের মৃত তছির আহমেদের ছেলে। নিহত টিটু সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানান ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নকীব। শুক্রবার বিকালে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের নাছির মাঝি সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন সকেট গ্রুপ ও ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন নান্নু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নান্নু ডাক্তারের সমর্থক যুবলীগ নেতা খোরশেদ আলম টিটু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

(ছেলে নিহত হওয়ার খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন মা। তিনি এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করেছেন।)

স্থানীয়রা জানিয়েছে, দৌলতখানের মদনপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু ডাক্তারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চেয়ারম্যান নান্নু অনুষ্ঠান শেষে ভোলা শহরে ফেরার পথে নাছির মাঝি এলাকায় একই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী সকেট জামাল গ্রুপ ও নান্নু ডাক্তার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নান্নু ডাক্তারের সমর্থক টিটু মারা যান। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নান্নু ডাক্তার জানান, তাদের অনুষ্ঠান শেষে মিছিল করার সময় সকেট জামালের নেতৃত্বে তার লোকজন স্প্রিটবোটযোগে মোহড়া দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে টিটু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। নিহত যুবলীগ নেতা টিটুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে যুবলীগ নেতা টিটু নিহত হওয়ার খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকীব, ধনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন কবির, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ ও দলের সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী হাসপাতালে অবস্থান করেন। সন্ধ্যায় ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে নিহত যুবলীগ নেতা টিটুর মরদেহ পড়ে রয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে। তার মরদেহকে ঘিরে রেখেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
পাশেই বসে কান্না করছে তার মা মমতাজ বেগম ও স্ত্রী রোকেয়া। টিটুর মা মমতাজ বেগম বলেন, মাঝের চরে আওয়ামী লীগের মিটিংয়ের কথা বলে শুক্রবার সকালে ঘর থেকে বের হয় আমার ছেলে টিটু। বিকেলে খবর পাই আমার ছেলেকে ইউপি নির্বাচনে প্রতিপক্ষ সকেট জামালের লোকজন গুলি করে মেরে ফেলেছে। তিনি বলেন, আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনার বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল উদ্দিন সকেট এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভোলার বাণী’কে জানান, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না, কিছু জানিও না।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে টিটু নিহত হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুবির কুমার জানান, বিজয়ী চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সকেট জামালের গ্রুপ এ হামলা চালায়। এতে একজন মারা গেছে। তবে, পরিস্থিতি এখন কিছুটা শান্ত রয়েছে।

এদিকে টিটু হ্ত্যার বিচারের দাবীতে রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের সকল অংগ-সংগঠনের নেতা-কর্মী ও হাজারো জনগন। তারা এ হত্যাকান্ডের সাথে যিনি বা যারা জড়িত তাদের দ্রুত সনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।