“আমার ছোট বেলার সাথী বাবুলকে যেমন দেখেছি”

১০ই অক্টোবর ভোলাবাসির জীবনে একটি বেদনাবহ দিন। আমার এবং আমাদের পরিবারের জন্যও একটি মর্মস্পর্শী শোকাবহ দিন। সময় গুনতে গুনতে ইতি মধ্যেই পেরিয়েগেলো ২৪ টি বছর। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এই দিনটি ঘুরে ফিরে আমাদের মাঝে উপস্থিত, অথচ বেচে থাকলে ৭১ বছরে পা দিত বাবুল। বাবুল ও আমার একই সনের একই দিনে জন্ম হয় ভোলার মোল্লা পরিবারে। ছোট বেলায় খেলার সাথী থেকে স্কুল, স্কুলের মাঠ, স্কুল কলেজের ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে একসাথে ঘুরে বেড়িয়েছি এক নতুন চেতনার সন্ধানে। আমাদের সমগ্র পরিবার ছিল আওয়ামী লীগ পরিবার, বাবা চাচারা কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সমন্বয়ক ও সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। কালিনাথ রায় বাজারে আমাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তখনকার দিনে দুই তিনটি পত্রিকা রাখা হতো তার মধ্যে ইত্তেফাক, দৈনিক আজাদ, সাপ্তাহিক পূর্বদেশ অন্যতম। গদিঘর এর সরকার মহাশয়ের কাছ থেকেই আমাদের পত্রিকা পড়ার হাতেখড়ি। পত্রিকা পড়তে পড়তেই আমি ও বাবুল সেই সময়কার পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে পরিচিত হই। পত্রিকা পড়তে পড়তেই যায়গা দিয়ে ফেলি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ অনেক নেতার নাম হৃদয়ের মণিকোঠায়।
বাবা-চাচারা আমাদের নিয়ে গল্প করতেন ইনি মাওলানা ভাসানী, ইনি শেখ মুজিব, ইনি মাওলানা তর্কবাগীশ। এছাড়াও এই সকল নেতারা প্রায় সবাই আমাদের বাসায় মেহমান হিসেবে থেকেছেন। এছাড়াও যশোরের প্রিয় নেতা মশিউর রহমান কাজী গোলাম মাহবুব সহ অনেকেই থেকেছেন আমাদের বাড়ির মেহমান খানায়। সে সময় বাবা চাচাদের সাথে ছোট ছোট আলাপ করতাম। ১৯৫৩ সনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ভোলা সফরে এসে আমাদের বাসায় মেহমান খানায় উঠেন। আমরা তখন ছোট, বাবার কাছে পরে শুনেছি বঙ্গবন্ধু নাকি বাবুলকে আর আমাকে কাছে পেয়ে আমাদের দুই জনের হতে দুই টাকা করে দিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে আমরা সবে মাত্র তখন বুঝতে শিখেছি মাত্র, তখন থেকেই বাবুল আর আমার মাঝে সব দলের নেতাদের সম্পর্কে একটা প্রচ্ছন্ন ধারণা হৃদয় ভাসতে থাকলো। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে তৎকালীন বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও স্বাধীকার আন্দোলন এর প্রতি মোহ জাগ্রত হতে শুরু করল। ভোলা সরকারি স্কুলে যে কোন মিটিং মিছিলে আমাদের দু’জনের একত্রে চলা। একবার একুশে ফেব্রুয়ারিতে স্কুল প্রাঙ্গনে শহীদ মিনার গড়তে হবে তাই দু’জন পরামর্শ করে মাটি দিয়েরাতের অন্ধকারে স্কুলের মাঠে শহীদ মিনার তৈরির প্রচেষ্টা নেয়ার সময় পুলিশের হামলা হলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া স্মৃতি আজও মনের মনিকোঠায় ভেসে বেড়ায়।
১৯৬৪ সালে বাবুলের নেতৃত্বে আমরা গড়ে তুলি স্কুল পর্যায়ে আই এস এস এ বরিশাল জেলা মাধ্যমিক ছাত্র সমিতির ভোলা মহকুমা শাখা। বরিশাল জেলা সদরে তৎকালীন আই এস এস এ সভাপতি ছিলেন তৎকালীন ছাত্রনেতা জহুরুল ইসলাম খান পান্না। যিনি বরিশালের প্রখ্যাত খান বাহাদুর হাসেম আলী খানের নাতি। এছাড়া তৎকালীন ছাত্রনেতা আলতাফ হোসেন খান বুলুসহ অনেকেই। মূলতঃ আই এস এস এ ছিল তৎকালীন সময় ছাত্রলীগের অনুসারি স্কুল পর্যায়ের ছাত্র সংগঠন।
ইতিমধ্যে ১৯৬৫ সনে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে সারা দেশের যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল। বাবুলসহ আমরা সমগ্র ভোলায় ব্যানার এর মাধ্যমে স্কুল পর্যায়ের ছাত্রদেরকে সংগঠিত করে ভোলায় বিশাল যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করলাম। সেই সময় আমাদের এই মিছিলের নেতৃত্ব দেবার জন্য ভোলা কলেজের তৎকালীন অনেক ছাত্রনেতা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তারা তা পারেনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর ১৯৬৬ সনে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করলেন। এই দাবি আদায়ের আন্দোলন সমগ্র বাংলাদেশ উল্কার মতো ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। বাঙালির বাঁচার দাবি ৬ দফা এই মর্মে একটি বই আমাদের দু’জনের হাতে আসলো। বাবুলসহ আমরা পর্যালোচনা করতে লাগলাম কি করে এই ৬ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন ভোলায় গড়ে তোলা যায়। এরইমধ্যে বরিশাল থেকে জেলা আওয়ামীলীগ নেতারা ভোলায় এসে সভা-সমিতি করা শুরু করলেন। বাবুল সহ আমরা বিভিন্ন সভায় যাতায়াত শুরু করলাম স্কুল পর্যায়ে আই এস এস এ ভেঙে দিয়ে সরাসরি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করলাম বাবুলের নেতৃত্বে। ভোলা সরকারি স্কুলের নির্বাচনে বাবুল সহকারি ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হলো, আমি হলাম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
বাবুল আমি বাসার বাইরে দুটি ঘরে মেহমান খানায় থেকে পড়াশোনা করতাম। এরমধ্যে আমার ঘরটি ছিল নিরাপদ। আমাদের গদি ঘরের সামনের এই দোতলা মেহমান খানায় বঙ্গবন্ধু, মাওলানা ভাসানী, মাওলানা তর্কবাগীশ সহ অনেক নেতা থেকে ছিলেন তখন এটা ভাবতেই পুলোকিত হতাম। সেই ঘরের মধ্যে বসে বাবুল আর আমি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবি, রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি সহ ৬ দফার দাবির উপর নিজ হাতে পোস্টার লিখে শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দিতাম। সেই আনন্দ উচ্ছ্বাস-আবেগ বর্তমান রাজনীতিতে আর নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যে ভোলার বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতাকে ডিপিআর অর্থাৎ ডিফেন্স পাওয়ার রুল অফ পাকিস্তান মামলায় জড়িয়ে দিল। তখন ডিপিআর মামলা দিয়েই রাজনীতিবিদদের হয়রানি করা হতো। এই ডিপিআর মামলায় এডভোকেট নাসির ভাই, শহীদ জুলু, সাইফুল্লাহ ভাই, শাহজাহান মানিকের সাথে বাবুল কে জড়িয়ে দেয়া হলো। আমাদের পরিবারের সবাই ভয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ল এবং বাবুল আর আমি কিছুদিন পালিয়েও ছিলাম। ১৯৬৭ সালে আমি ভোলা মহকুমা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক এবং ১৯৬৮ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক হই। বাবুল ভোলা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেলের এজিএস নির্বাচিত হয়। বলতে গেলে বাবুল আর আমি সার্বক্ষণিক ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাই এবং আমাদের বাসার সামনের মেহমান খানায় আমার পড়ার ঘরে মধ্যেই গড়ে উঠেছিল ভোলা মহাকুমা ছাত্রলীগের রাজনৈতিক আড্ডাখানা ও রাজনৈতিক সাংগঠনিক চালিকা শক্তি। ১৯৬৮ থেকে ১৯৬৯ এই সময়টায় তৎকালীন রাজনীতিতে ব্যাপক উত্তাল হয়েওঠে। কারণ এ সময়টা ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ এর সময়কাল। ৬ দফা ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন সুদৃঢ় নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বিশাল আন্দোলন, যাকে বলা হয়ে থাকে স্বাধীকার আন্দোলন। ভোলায় প্রতিটি মিটিং-মিছিলে বাবুল একজন সক্রিয় ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে এগিয়ে যেতে থাকে। ১৯৬৮ সালে বন্দী মুক্তি আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে হরতাল মিছিল লেগেই থাকত। একদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে আমাদের দোতলা পড়ার ঘরে বসে বাবুলসহ আমরা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন পরিকল্পনা করছিলাম। ওই সময় ডিবির দারোগা রাব্বানীসহ কিছু সংখ্যক পুলিশ এসে আমাদের পড়ার ঘরে হানা দেয়। একপর্যায়ে বাবুলসহ আমি দোতলা ঘরের উপর টিনের চাল থেকে অন্য চালে গিয়ে সরে পড়ি। ধরা পড়ে যায় জিলু সহ উক্ত আলোচনায় উপস্থিত ৩ জন।
এইদিকে ১৯৬৯ সালে ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে থাকে। অন্যদিকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় প্রতিনিয়ত একেকটি গুজবের জন্ম দিচ্ছিল। অপরদিকে ঢাকার পল্টন ময়দান কাঁপিয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে গর্জে উঠতে থাকে ছাত্র সমাজ। প্রতিটি পত্রিকায় আন্দোলনের ছবি সহ প্রচার হতে থাকে বিভিন্ন সংবাদ। বাবুলসহ আমরা তা দেখে আন্দোলিত হতে থাকি। ১৯৭০ সালে বাবুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুয়োলোজি অনার্স প্রথম পর্বের ছাত্র। ফজলুল হক হলের ২৫২ নং কক্ষে থাকতো বাবুল। সেখানে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ও নেতৃত্ব তুলে ধরতে সক্ষম হয় বাবুল। তখনকার দিনে সাপ্তাহিক পূর্বদেশে বাবুলের ফটো সহ নতুন প্রজন্মের ছাত্র হিসেবে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। যার মাধ্যমে বাবুলের দেশের প্রতি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক পরিচয় ফুটে ওঠে। ১৯৬৯ সনে ভোলা মহকুমা ছাত্রলীগের সম্মেলনে আমি মহকুমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হই এবং সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয় শহীদ সালেহ আহমেদ ভাই।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে বাবুলসহ আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সমগ্র ভোলা জেলায় ব্যাপক প্রচারণায় অংশগ্রহণ করি। উল্লেখ্য যে, তৎকালীন ভোলা মহাকুমা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ভোলায় প্রথম ৭টি থানায় আমরা নির্বাচন জনসভার সূচনা করি। সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জনাব তোফায়েল আহমেদ। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে অতিথি বক্তা ছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর সন্তান জনাব ফাইজুল হক, আগরতলা মামলার আসামি গুলিবিদ্ধ সার্জেন্ট ফজলুল হক, আগরতলা মামলার অপর আসামি হাবিলদার আজিজুল ইসলাম সহ আরো অনেকেই। সকল সভাগুলোই বাবুল, সালেহ আহমদ ভাই ও আমার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। ইতিমধ্যে বাবুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সমাগত।
১৯৭১ সালের এর ২৫ শে মার্চের অনেক আগেই বাবুল ঢাকা থেকে ভোলা চলে আসে। ২ রা মার্চ আমি ভোলায় আমাদের জাতীয় পতাকার আদলে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি সদর রোডস্থ বরিশাল দালান এর জনসমাবেশে, পতাকাটি মিছিল করে বহন করে নিয়ে আমি কালেক্টরট এর পুরনো বিল্ডিং এর ছাদে উঠে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি। বাবুল ৩ রা মার্চ ঢাকা থেকে ভোলায় পৌঁছে এবং ৪ ঠা মার্চ থেকে আমরা টাউন স্কুলের মাঠে সামরিক ট্রেনিংয়ের ক্যাম্প স্থাপন করি। বাবুল এতে অংশগ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে উক্ত ট্রেনিং ক্যাম্প বাবুলের নেতৃত্বে চলতে থাকে।
২৫ মার্চ রাত্রি আনুমানিক ১ টা, আমরা পরিবারের সদস্যরা আমার বড় ভাই মোঃ ফারুক, বাবুল সহ আরো অনেকে ঘরের বারান্দায় বসে আছি এবং নিজেদের মধ্যে দেশের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আলাপ আলোচনা করছি। এমন সময় টিএন্ডটি থেকে অপারেটর এলাহী সাহেব পিয়ন দিয়ে একটি টেলিগ্রাম বার্তার কপি আমাদের বাসায় পৌঁছে দিল। যা ছিল ২৫ শে মার্চ রাত্রি বারোটা এক মিনিটের শেষ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আহ্বান। স্বাধীনতার পর দুর্ভাগ্যক্রমে ওই টেলিগ্রামের কপিটি হারিয়ে ফেলি। টেলিগ্রাম পাওয়ার সাথে সাথে বাবুলসহ আমি ভোলাতে আমাদের জীপ গাড়িতে মাইক লাগিয়ে প্রচারে নেমে পড়ি বঙ্গবন্ধুর আহবানে পাকিস্তানি হানাদারকে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকে সমগ্র শহরে প্রচার করি। সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। অন্যদিকে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রস্তুতি।
সর্বশেষ যুদ্ধের একপর্যায়ে বাবুল ভারতে চলে যায় এবং সেখানে ভারতের দেরাদুনে মুজিব বাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্পে ট্রেনিং সমাপ্ত করে স্বাধীনতার মহান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ভোলা জেলার মুক্তিবাহিনীর প্রধান হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ১৬ ই ডিসেম্বর দেশ হানাদার মুক্ত হওয়ার পর বাবুল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরে আসার পর ঢাকা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর নিকট অস্ত্র সমর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ফিরে যায়। পড়াশোনা শেষে ঢাকায় ব্যবসা শুরু করলেও রাজনৈতিক টানে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে ফিরে আসতো ভোলাতে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তোফায়েল আহমেদের ২টি আসনের নির্বাচনে জয়লাভ করায় ভোলা সদর এক আসন ছেড়ে দেন এবং সেই ছেড়ে দেয়া শূন্য আসনে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাবুলকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। সময় মত নির্বাচন হলে বাবুল যে বিপুল ভোটে জয়লাভ করতো তার মধ্যে কোন সন্দেহ ছিল না। প্রতিপক্ষের অহেতুক মামলায় নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায় এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ১০ই অক্টোবর ১৯৯৬ সালে অসময়ে, অকালে নির্মমভাবে জীবন দিতে হল বাবুলকে। বাবুল আর ফিরে আসবে না একথা সত্য, কিন্তু ভোলার সকলের হৃদয়ে পথে একজন ভালো মানুষ ও একজন আদর্শ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে গেছে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। মৃত্যুকালে বাবুল তার স্ত্রী ও দুই ছেলে ইয়াদ এবং ফাহাদ সহ পরিবারের অসংখ্য সদস্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

লেখক : ফজলুল কাদের মজনু মোল্লা
সভাপতি
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ভোলা জেলা শাখা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।