সর্বশেষঃ

লালমোহনে শালিস বৈঠকে মারধরের অপমান সইতে না পেরে রিকশা চালকের আত্মহত্যা

ভোলার লালমোহনে রিকশা চুরির দায়ে শালিস বৈঠকে মারধরের ঘটনায় অপমান সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মো. হোসেন নামের এক রিকশা চালক। শনিবার রাতে পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের শেখের দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় লালমোহন থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল কবীরসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত ওই যুবকের মা কমলা বেগম। এই মামলায় অজ্ঞাত বিবাদী করা হয়েছে আরও ৮-৯ জনকে।
সূত্রে জানা যায়, ৪দিন আগে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের সিরাজের গ্যারেজের একটি ব্যাটারী চালিত রিকশা চুরি করে হোসেন। পরে ওই রিকশা বোরহানউদ্দিনের শান্তিরহাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। রিকশাটি হোসেন সেখানে বিক্রি করে ৭ হাজার টাকা অগ্রিম নেন। বিষয়টি জেনে ওই রিকশার মালিক সিরাজ ওই ৭ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে রিকশা নিয়ে আসে এবং হোসেনকে ডেকে এনে স্থানীয় আকতার দালাল নামে এক সুদ ব্যবসায়ীসহ তাকে বেধরক মারধর করা হয়। পরে শনিবার সন্ধ্যার দিকে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল কবীরের অফিসে পূণরায় শালিশ বৈঠক হয়। সেখানে চুরির করার কারণে হোসেনের ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তার মাকে ডেকে এনে ছেলেকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বলেন কাউন্সিলর। শালিসে দ্বিতীয় দফা মার খেয়ে হোসেন বাসায় গিয়ে রাতের খাওয়া শেষ করে ঘরের বাহিরে যান। পরে বাড়ির পাশে আম গাছের সাথে হোসেনকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে রাতেই লালমোহন থানার ওসি মাকসুদুর রহমান মুরাদসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ থানায় নিয়ে যায়। রোববার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ভোলা মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় হোসেনের মা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে সিরাজ, আকতার দালাল ও কাউন্সিলর সাইফুল কবীরকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি কুচক্রি মহল তাকে ফাঁসাতে ঘটনার সাথে তাকে জড়াচ্ছে। শালিসে তাকে কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, এ ঘটনায় থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ভোলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে এটি আত্মহত্যা নাকি মারধরের কারণে মৃত্যু।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।