সর্বশেষঃ

লালমোহনে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভোলার লালমোহনের দক্ষিণ লালমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরস্পর যোগসাজসে নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা অমান্য করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও সনাতন ধর্মীয় শিক্ষার্থীবিহীন প্রতিষ্ঠানে সনাতন ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বর্তমান প্রধান শিক্ষক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মো. নিরব নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। গত ২২ আগস্ট ভোলার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন তিনি।
মামলায় ওই বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, সাবেক সভাপতি মো. শফিউল্ল্যাহ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব মো. আবি আবদুল্যাহ, বর্তমান প্রধান শিক্ষকের পিতা ও সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ মিয়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের ডিজি’র প্রতিনিধি ও দৌলতখান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিব শংকর দেবনাথ এবং প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও দেবীরচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমানকে আসামী করা হয়।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, উল্লেখিত ব্যক্তিরা বেআইনীভাবে পরস্পর যোগসাজসে সরকারি আইন অমান্য করে বর্তমান প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে নিয়োগ প্রদান করেছেন। জাকির হোসেন একই বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে ১ সেপ্টেম্বর ২০০৫ সালে এমপিও প্রাপ্ত হন, পরে ২ জুলাই ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানপূর্বক ৩০ এপ্রিল ২০১৬ সালে এমপিও প্রাপ্ত হন। এখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো সম্পর্কিত নির্দেশিকা ২০১৩ এর ১১’র উপধারা ২’র পরিশিষ্ট্য (ঘ) (৪) এর নির্দেশনানুযায়ী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার নির্দেশনাকে উপেক্ষিত করেছেন নিয়োগ বোর্ড। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বর্তমান প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের স্বজনদের সমন্বয়ে ৩জন সাজানো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী দেখানো হয়। এদের মধ্যে একজন জাকির হোসেন, আরেকজন তার ভগ্নিপতি মো. নজরুল ইসলাম এবং পার্শ্ববর্তী চরফ্যাশন উপজেলার ইকবাল হোসেন। যাকে কাগজেপত্রে লালমোহন উপজেলার বাসিন্দা দেখানো হয়।
বিবরণে আরও বলা হয়, ওই বিদ্যালয়ে সনাতন ধর্মের কোনও শিক্ষার্থী না থাকলেও ২০০৭-০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ মিয়া অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে ওই ধর্মের একজন শিক্ষক নিয়োগ দেন। ওই শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে গেলে ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ সালে পুনরায় অবৈধ উপায়ে আরেকজন শিক্ষক নিয়োগ দেন তিনি। অথচ পুনরায় নিয়োগকৃত শিক্ষকের প্রায় এক বছর আগে অর্থ্যাৎ ১৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে অবসর গ্রহণ করেছিলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ মিয়া। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে নিজেদের আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে গড়া কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানাবিধ অনিয়মের মাধ্যমে সরকারের আনুমানিক ৪৩লক্ষ ৮৮হাজার ১৬৭ টাকা আত্মসাত করা হয় বলে মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, এর আগে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলায় উল্লেখিত অভিযোগগুলো তুলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়। ওই অভিযোগের সঠিক তদন্তপূর্বক প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে আদালতের দারস্থ হন মো. নিরব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ লালমোহন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।