তিনজন ডাক্তার দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মনপুরার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

ভোলা জেলাধীন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলায় অবহেলিত দেড় লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য ১১ জন চিকিৎসক, ১৫ জন নার্স, ১১ চিকিৎসা সহকারী, ১৩ জন চিকিৎসা সহায়ক থাকার কথা থাকলেও জনবল চরম সংকটে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বহুল আলোচিত ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মিত হলেও আদৌ লোকবল সংকট সহ নানা অজুহাতে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম বিতর্কিত যা গণমাধ্যমে বারবার বহুল আলোচিত হয়ে উঠৈ এসেছে সঠিক তথ্য চিত্র। এদিকে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে স্বাস্থ্য সেবার বিশেষ সুবিধা থাকলেও সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরার জনগন।

গত ২৮ জুলাই, ২০২১ বিকেল অনুমান- ৪ টায় মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং করোনা আইশোলেশন ইউনিট পরিদর্শনে যায় ভোলার বাণী’র একটি টিম । পরিদর্শনে দেখা যায় ০৩ জন করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন। মাত্র ১০টি বেড নিয়ে গঠিত আইশোলেশন ইউনিটে নেই কোন প্রয়োজনীয় সুবিধা।

করোনা আইশোলেশন ইউনিট সম্পর্কে সেবিকা সুপার ভাইজার কণিকা রাণী জানান, লোকবল সংকটের কারণে আমরা নানান অসুবিধায় রয়েছি। নেই বিদ্যুৎ সুবিধা, নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জমাদি চরম উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে করোনা আইশোলেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।

অন্যদিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা ৩১ বেড চালু থাকার কথা থাকলেও ভোলার বাণী’র ক্যামেরায় ফুটে উঠেছে ২৪টি বেড। যাহার মধ্যে শিশু ও পুরুষ ১২টি এবং মহিলা ও প্রসূতি ১২টি। সাংবাদিক টিম পরিদর্শন কালে সেবিকা মাহমুদা কলি কর্মরত ছিলেন। মাহমুদা কলি ভোলার বাণী’কে জানান, ৫০ শয্যা বেড চালু থাকার কথা থাকলেও তা আদৌ চালু হয়নি। বেশির ভাগ সময় দেখা যায় রোগী আসলে ফ্লোরে বেড করে দিতে হয়। এছাড়া লোকবল সংকট ও বিদ্যুৎ সংকটতো রয়েছে।

পরিদর্শনকালে মহিলা ইউনিটে রোগী সালমা আক্তার জানান, আমি দুই দিন যাবৎ এখানে ভর্তি রয়েছি, হাসপাতালের সেবা ভাল না, ডাক্তার আসে রাত্র ১০.০০ টায়। অপরিস্কার আর অপরিচ্ছন্নতা সাংবাদিকদের নিজের চোখে দেখার জন্য বলেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেই তিন দিন যাবৎ অসুস্থ্য, আমি কর্মস্থলে নেই। যা তথ্যের প্রয়োজন ক্লার্ক মাহমুদুর রহমানের কাছ থেকে জেনে নেন।

বিষয়টি নিয়ে  আবাসিক অফিসার ডাঃ রাসেলের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তিন জন ডাক্তার নিরলস পরিশ্রম করছি। যেখানে ১১ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেখানে আমরা তিন জন কতটুকু সেবা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা জনবল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, নৌ-এম্বুলেন্স সহ সকল সুবিধা নিশ্চিতের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে মনপুরা নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যেই স্থানীয় সংসদ সদস্য জননেতা আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ভাইকে বিষয়টি অবগত করেছি। আশা করি তিনি বিষয়টি নিয়ে অতি দ্রুত মনপুরা মানুষের দাবী আদায়ে এগিয়ে আসবেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্বের চেয়েও মনপুরা স্বাস্থ্য সেবার মান অনেক ভাল হয়েছে। আমি আরও আধুনিকায়ন করার জন্য ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য সেবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।