প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

ভোলা থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল “ভোলা নিউজ ডটকম”সহ কয়েকটি অনলাইনে গত ২৯/০৬/২০২১ ইং তারিখে “ভোলায় প্রাথমিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে চেক দুর্নীতির অভিযোগ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদটিতে লেখা হয়েছে শাহীন নামক জনৈক ব্যক্তির বাসায় হোম টিচার হিসেবে তাদের সন্তানদের পড়াশুনার দায়িত্বে ছিলাম আমি। এই পেশার দায়িত্বে থেকে শাহীনের পরিবারকে ঘর ও জমি কেনার কু-প্রোরচনা দিয়ে ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলা হয় আমার বিরুদ্ধে। সংবাদে আরো বলা হয়, প্রমাণ হিসেবে আমি একখানা চেক প্রদান করি এবং বাকি টাকা দলিল সম্পাদনার জন্য ২ মাস সময় নেই। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রকৃত ঘটনা হলো, শাহীন আমার পরিচিত। সে বিভিন্ন মানুষের নিকট লভ্যাংশের বিনিময়ে ব্লাঙ্ক চেক জমা নিয়ে নগদ টাকা-পয়সার লেন-দেন করে। তাহাতে আমার পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় নগদ টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সরল বিশ্বাসে শাহীনের নিকট থেকে গত ০৫/০৫/২০১৯ইং তারিখে ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশে এক বছর মেয়াদে ২ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করি। যার জামানত হিসেবে আমার পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ভোলা শাখার চলতি হিসাব নং-৩০৫৩০ এর চেক নং-৫০১৪৩০৪-তে শুধুমাত্র অংকে ২,৫০,০০০/- লিখিয়া এবং স্বাক্ষর করিয়া শাহীনকে প্রদান করি। অতপর শাহীন নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই আমার নিকট ২,৫০,০০০/- দাবী করে। আমি সে সময় উক্ত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শাহীন আমার উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়। অতপর গত ০৭/০৭/২০১৯ইং তারিখ সকালে শাহীন উক্ত বিরোধের জের ধরে তার নিকট রক্ষিত আমার দেয়া ২,৫০,০০০/- এর চেকখানা ট্যাম্পারিং করিয়া সম্পূর্ণ প্রতারণামূলকভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে যেখানে অংকে ২,৫০,০০০/- লেখা ছিল, যার অংক ২ এবং ৫ এর মধ্যবর্তী স্থানে অতিরিক্ত ১ অংক বসিয়ে এবং বাংলায় নিজের ইচ্ছেমত সম্পূর্ণ প্রতারণামূলকভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া ২১,৫০,০০০/- লিখিয়া সত্যের বিপরীতভাবে ব্যাংকে উপস্থাপন করিয়া উক্ত চেকখানা ব্যাংক কর্তৃক ডিজ-অনার করায় পরবর্তীতে শাহীন গত ১৭/০৭/২০১৯ইং তারিখে আমার বরাবরে এনআইএ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারার বিধান মোতাবেক ২১,৫০,০০০/- দাবী করে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করে।
আমি উক্ত নোটিশ প্রাপ্ত হয়ে চেক জালিয়াতির বিষয়ে অবগত হয়ে বিগত ০১/০৮/২০১৯ইং তারিখে শাহীনের বরাবরে উক্ত লিগ্যাল নোটিশের একখানা জবাব প্রদান করি। শাহীন উক্ত নোটিশের জবাব প্রদান না করে ভোলার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এনআইএ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারার বিধান মতে আমার বিরুদ্ধে সিআর-৩৫৪/২০১৯ ইং মামলা আনায়ন করে, যা বর্তমানে চলমান।
অতএব আমি নিরুপায় হয়ে শাহীনের কর্মস্থল জেলা প্রশাসক কার্যালয়, ভোলা বরাবরে একটি দরখাস্ত প্রদান করলে জেলা প্রশাসক, ভোলা উক্ত বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভোলা সদর বরাবরে তদন্তভার অর্পন করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভোলা সদর উক্ত তদন্তভার প্রাপ্ত হয়ে উভয় পক্ষের সাক্ষ-প্রমান শুনে যাচাই-বাছাই করে এই সিদ্ধান্তে উপনীতি হন যে, শাহীন আমার প্রদত্ত ২,৫০,০০০/- এর চেকখানা ট্যাম্পারিং করিয়া সম্পূর্ণ প্রতারণামূলকভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া যেখানে অংকে ২,৫০,০০০/- লিখিত ছিল, তার অংক ২ এবং ৫ এর মধ্যবর্তী স্থলে অতিরিক্ত ১ অংক বসিয়ে এবং বাংলায় নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী সম্পূর্ণ প্রতারণামূলকভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া ২১,৫০,০০০/- লিখিয়া সত্যের বিপরীতভাবে ব্যাংকে উপস্থাপন করে উক্ত চেক খানা ব্যাংক কর্তৃক ডিজ-অনার করায়। উক্ত বিষয়ে গত ২৯/০৯/২০১৯ইং তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভোলা সদর তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। যার স্মারক নং-৩১.১০.০৯১৮.০০০.০০১.০১২.১৯-৯০১।
উক্ত বিষয়টি মিমাংশার জন্য শাহীন আমার বন্ধু মোঃ অলিউল্লাহ এর সাথে মুঠোফোনে কল করে কথা বলে এবং কথা বলার এক পর্যায়ে শাহীন উক্ত চেক জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করে। যাহার কল রেকর্ডটি আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়াও আমি শাহীনের বিরুদ্ধে ভোলা চীফ জুডিশিয়াল আদালতে চেক জালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করি। যার নং-১১/২০২০ইং। এবং মামলাটি এখনও চলমান। উক্ত মামলায় আদালত কর্তৃক ডিবি পুলিশের নিকট তদন্তের ভার অর্পন করা হয়। পরবর্তীতে ডিবি পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন অনুসারেও শাহীনের প্রতারনা ও চেক জালিয়াতির বিষয়টি প্যানাল কোড-৪০৬/৪২০/৪৬৫/৪৬৭/৪৬৮ ধারায় অপরাধী প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয় এবং উক্ত প্রতিবেদনের তদন্ত রিপোর্ট আমার নিকট রয়েছে।
উল্লেখিত সংবাদে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য প্রদান করে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। আমি প্রকাশিত উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

মোঃ তৌহিদুল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক
৫৯ নং চরভেদুরিয়া ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
ভোলা সদর, ভোলা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।