সর্বশেষঃ

টমেটোতে বাড়তি উপার্জনের আশা লালমোহনের গৃহিণী মিনারা’র

জাহিদ দুলাল ॥ গৃহিণী মোসা: মিনারা বেগম। পরিবারে বাড়তি উপার্জনের কথা ভেবে জমি বর্গা নিয়ে প্রথমবারের মতো টমেটো চাষ শুরু করেছেন তিনি। ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী এলাকায় নিজ বাড়ি সংলগ্ন ১০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছেন গৃহিণী মিনারা বেগম। তিনি ওই এলাকার মো. জামাল উদ্দিনের স্ত্রী। মিনারা বেগমের চাষ করা টমেটো গাছগুলো এখন ফুলে ফুলে ছেঁয়ে গেছে। যেখানে রয়েছে হাইব্রিড উন্নয়ন জাতের টমেটো।
গৃহিণী মিনারা বেগম বলেন, আমার স্বামী একজন কৃষক। গত কয়েক বছর ধরে চাষাবাদ করছেন আমার স্বামী। তিনি ক্ষেতে অনেক পরিশ্রম করেন। ঘামঝরা পরিশ্রম করে সংসার চালাচ্ছেন আমার স্বামী। যার জন্য এ বছর প্রথমবারের মতো পরিবারের বাড়তি উপার্জনের লক্ষ্যে টমেটো চাষ শুরু করেছি। নিজেই যেন চাষ করতে পারি সে জন্য বসতঘর সংলগ্ন ১০ শতাংশ জমি বর্গা নিই। সেখানে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া বিনামূল্যের সার-বীজ পেয়ে গত দুই মাস আগে টমেটো চাষ শুরু করি। এরমধ্যেই গাছগুলো ফুলে ফুলে ছেঁয়ে গেছে। গাছের গঠনও ভালো। আশা করছি ফলনও ভালো হবে।
তিনি আরো বলেন, এ টমেটো চাষে খরচ হচ্ছে- কীটনাশক, চাষাবাদের সরঞ্জাম ও জমি বর্গার টাকা। যেন মৌসুম শেষে এই টমেটো চাষাবাদের পেছনে ব্যয় হবে আট থেকে দশ হাজার টাকার মতো। তবে ফলন ভালো হলে এই ১০ শতাংশ জমিতে প্রায় ৫৫ মণের মতো টমেটো হবে। বাজারে এখন টমেটোর অনেক চাহিদা। আগামী দেড় মাসের মধ্যে পুরো ক্ষেতের টমেটো বিক্রি করতে পারবো। মৌসুম শেষে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হবে। খরচ বাদে চল্লিশ হাজারের অধিক টাকা লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি। এই লাভের টাকা সংসার খরচে ব্যয় করতে পারবো।
গৃহিণী মিনারা বেগমের স্বামী মো. জামাল উদ্দিন জানান, ৩৫ বছর ধরে আমি কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। প্রতি বছরই বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ করি। আমার চাষাবাদ দেখে এ বছর আমার স্ত্রী টমেটো চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার ভাবনা; এতে পরিশ্রম কম। আমি বাসায় না থাকলেও সে নিজেই এই টমেটো ক্ষেতের পরিচর্যা করতে পারবে। তার আগ্রহ দেখে আমি উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে আলাপ করি। এরপর তারা বিনামূল্যে সার ও বীজ দেন। এসব পেয়ে আমার স্ত্রী টমেটো চাষ শুরু করেন। তার কাজে আমিও যথাসাধ্য সহযোগিতা করি। আমার স্ত্রীর চাষ করা টমেটোর ক্ষেতের অবস্থা এখন অনেক ভালো। সবকিছু ঠিক থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। আয়ও হবে ভালো।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র দাস বলেন, আমরা উপজেলার প্রত্যেক কৃষকের প্রতি আন্তরিক। কৃষকদের যেকোনো সমস্যায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করি। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী এলাকায় প্রথমবারের মতো এক গৃহিণী টমেটো চাষ করেছেন। তাকে বিনামূল্যে আমরা সার ও বীজ দিয়েছি। নিয়মিত তার ক্ষেত পরিদর্শনের চেষ্টা করছি। ওই গৃহিণীর ক্ষেতের গাছের অবস্থা অনেক ভালো। এরমধ্যেই তার টমেটো গাছগুলোতে ফুল এসেছে। ফলনও অনেকটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলন বিক্রি করে ওই গৃহিণী ভালো লাভবান হবেন বলে আশা করছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।