সর্বশেষঃ

ভোটে আগ্রহ নেই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা

এইচ এম নাহিদ : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জনের জন্য একটি গোষ্ঠী তৎপর রয়েছে। তারা আগামী ৭ জনুয়ারি ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ সহ প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা চাচ্ছে যাহাতে ভোলার ভোট কেন্দ্র গুলোতে সাধারন ভোটাররা যাহাতে ভোট কেন্দ্রে না আসেন। ভোলায় নৌকার বিপক্ষে অন্য যারা এবার নির্বাচন করছেন তাদেরও কোন তৎপরতা নেই। এক কথায় ভোলার পুরো নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দখলে। এ কারণে ভোলার ৪ টি আসনে নৌকার প্রার্থীরা নির্ভাবনায় আছেন । তবে সাধারন ভোটাররাও মনে করছেন, ভোটের দিন ভোলার চারটি আসনেই ভোটার উপস্থিতি আশাতীত হবে না।

এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, ভোলার ৪টি আসনে যে চারজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। তোফায়েল আহমেদ এদের মধ্যে অন্যতম। এলাকার উন্নয়নে নিজ নিজ এলাকায় সবারই অবদান রয়েছে। এলাকার মানুষ সেটা মনে রাখবে এবং তাদের ভোট দিয়ে আবারো নির্বাচিত করবে।

তবে নির্বাচন বিরোধীেরা ভোলা সদরসহ বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় ভোট বর্জনের জন্য একটি গোষ্ঠী সরব রয়েছে। তারা সুযোগ বুঝেই লিফলেট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নেমে পড়ছে। কেন ভোট বর্জন করা হবে তা যুক্তিসহকারে উপস্থাপন করে ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ভোটের দিন তাদেরকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন। বিএনপি – জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর অনেক নেতাকর্মী পৌরসভা, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও ইউনিয়ন পর্যায়ে তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদেরই তৎপরতার কারণে অনেক এলাকার ভোটাররা ভোট দেয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন।

ভোলা সদরের খলিফা পট্টি এলাকার চায়ের দোকানদার মুসা মিয়া জানান, ৭ তারিখের নির্বাচনে ভোট দেয়ার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ নাই। কারণ এখানে ভোটের আমেজ নেই। শহরে তেমন একটা পোস্টার নেই, নেই তেমন কোন জোরালো প্রচার-প্রচারণা। একজনকে জঙ্গল থেকে ধরে এনে মশাল মার্কায় দাঁড় করানো হয়েছে, তাকে কেউ চেনে না। নৌকার প্রার্থীতো এমনিতেই জিতবেন। এর চেয়ে বসে বসে দোকান চালানোই ভালো, তাতে পেট বাঁচবে।

দ্বীপ বেষ্টিত ভোলা জেলার চারটি আসনেই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নেয়াই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতির হার হবে অনেক কম। এর কারণও জানিয়েছেন ভোটাররা। তারা বলছেন, ৪টি আসনেই নৌকার প্রার্থীরা সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী। তাদের বিপক্ষেও কোন ভাল প্রার্থী নেই। যারা আছেন তাদেরকে এলাকার মানুষ তেমন একটা চেনে না।

বিএনপির, জামাত, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও তাদের সমমনা দলগুলোর ভোটাররা ভোট দিতে যাবেন না। আওয়ামী লীগের অনেক ভোটার মনে করছেন নৌকার প্রার্থীরা এমনিতেই জয়লাভ করবেন। কারো একজনের ভোটে নিশ্চয়ই জয় পরাজয় নির্ভর করবে না।
এসব কারণে এবার ভোটকেন্দ্র গুলোতে ভোটারের উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নেয়াই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ভোলা সদর আসনের লাঙ্গলের প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, যদি ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায় তাহলে নৌকায় বিপরীতে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিবে বলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে ভোটার যাবে কিনা তা নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে। কারণ এখানে ভোটের কোন উৎসব মুখর পরিবেশ নাই। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে আসেনি। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হবে কিনা তা এখনো বুঝতে পারছি না। তারপরেও আমরা দিনরাত ভোটারদের কাছে যাচ্ছি।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তোফায়েল আহম্মেদকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সক্ষমতা আমার নেই। তারপরও নির্বাচন করছি।

ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোলায় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সজাগ রয়েছে। সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এদিকে ভোলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভোলা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, ভোলা জেলার সর্বোচ্চ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোথাও কোন আপত্তিকর ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি। পুলিশ, রেব, বিজিবি সহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংক্ষক সদস্য ভোলার চারটি নির্বাচন এলাকায় কঠোরভাবে নজরদারিতে রেখেছেন। তাছাড়া গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যাও খুব তৎপর রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।