সর্বশেষঃ

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তান্ডবে লালমোহনে প্রায় ১২ কোটি টাকার কৃষি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা

জাহিদ দুলাল, লালমোহন ॥ ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তান্ডবে ভোলার লালমোহন উপজেলায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধানের ক্ষতি হওয়ার ধারণা করা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি উপকূল অতিক্রমের সময় লালমোহন উপজেলায় আঘাত হানে। এতে ক্ষেতে থাকা অন্তত ২০ শতাংশ ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া মাঠে থাকা শীতকালীন শাক-সবজিরও ক্ষতি হয়েছে। টাকার হিসেবে সব মিলিয়ে লালমোহনে প্রায় ১২ কোটি টাকার কৃষি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমোহনের রমাগঞ্জ ইউনিয়নের আজহার রোড এলাকার কৃষক মো. মোশারেফ হোসেন জানান, এ বছর তিন একর জমিতে ধান চাষ করেছি। এ ধান চাষে অন্তত এক লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। শুক্রবারের ঝড়ের কারণে ক্ষেতের অধিকাংশ ধান এখন জমিতে লুটিয়ে পড়ে গেছে। যার ফলে এসব ধান নষ্ট হয়ে যাবে। এ জন্য এ বছর ধানে আমাকে লোকসান গুণতে হবে।
ওই ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ গ্রামের আরেক ধান চাষি মো. নূরনবী মিয়া বলেন, জমি লগ্নি রেখে এ বছর আড়াইশত শতাংশ জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করি। প্রথম থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় ক্ষেতে ফসলও ভালো হয়েছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ে জমির অধিকাংশ ধানই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। এসব ধান আর থাকবে না, সব নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা ক্ষুদ্র কৃষক, এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া আমাদের জন্য কষ্টের হবে। এ জন্য আমরা সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে লালমোহন উপজেলায় ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে লালমোহনের লর্ডহার্ডিঞ্জ, বদরপুর, ধলীগৌরনগর, পশ্চিম চরউমেদ ও ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের চাষিরা সর্বোচ্চ ধানের আবাদ করেছেন।
লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আহসান উল্যাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে লালমোহনের কৃষকদের অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। কারণ আগামী ১৫ দিন পর থেকেই কৃষকরা তাদের জমির ধান কাটতে পারতেন। এখন যে সব ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তা আর টিকবে না। এ সকল ধান পঁচে যাবে। আমরা কৃষি অফিস থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি তালিকা করেছি।
অন্যদিকে, শুক্রবার দুপুরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তা-বে লালমোহন উপজেলায় অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৪৫টি ঘরের আংশিক ক্ষতি ও ১৫টি ঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, আমরা ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে প্রাথমিকভাবে একটি তালিকা ইতোমধ্যে জেলায় পাঠিয়েছি। সেখান থেকে বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে তা পৌঁছে দিবো। এছাড়া মানুষ পূর্ব থেকে সতর্ক থাকায় কোনো আহত বা নিহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘূর্ণিঝড়ের খবরে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে তিন হাজারেরও অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।