মধ্যরাত : পর্ব-১৯৩

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : সন্ধ্যার দিকে আমি আর আকাশ সমুদ্রের পাড় ধরে আবার জেলে দু’টোর সন্ধানে গেলাম। তখন জেলে দু’টো অনেক মাছ ধরে বোট ভর্তি করে ফেলেছে। দেখলাম মাছগুলি গাড়ীতে তুলছে। আমাদের দেখে এত পরিশ্রমের মাঝে ওরা হেসে ফেলল। বলল এসেছেন ? আমি বললাম, না এসে কি করব ভাই। ওরা আমাদের গাড়ীর পিছু পিছু গাড়ী ড্রাইভ করে এগিয়ে চলল। অনেক গ্রামের ভিতর ওদের ছোট্ট কুটির, তবে খুব পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। ফুলের বিভিন্ন কেয়ারীতে বাড়ীটা যেন ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে। পাশেই আর একটা কুটিরে আর একজন ভদ্র মহিলাকে যেন কি বলল ওরা আমাদের নিয়ে গ্রামের মধ্যে ছোট একটা ১০ বেডের হাসপাতালে নিয়ে গেল। বলল, দেখ এখানে ইন্ডিয়ান আছে। দু’জন ডাক্তার ৪জন সিস্টার এর আনা গোনায় জুতোর ঠক ঠক শব্দে হাসপাতালটা একটু সরগরম আছে। আমি সিস্টারকে জিজ্ঞাসা করলাম, হ্যাঁ দু’টো ইন্ডিয়ান ছেলে মেয়ে আছে। ওরা হিং¯্র জন্তুর কবলে পরে আহত। আমি অস্থিও হয়ে উঠলাম। ওরা বলল, এখন রাত হয়ে গেছে রোগীরা বিশ্রামে আছে। ডাক্তারের নিষেধ তাদের ডিসটার্ভ করা, তোমাদের রিলেটিভ হলে কাল সকালে দেখা করো।
আমি আর আকাশ বেশী উচ্চ-বাচ্য না করে চুপচাপ আবার দ্রুত গাড়ী ছেড়ে মোটেলে এলাম। মোটেলে এসে দেখি ডোরা কুসুম মোটেলের বারান্দায় পায়চারী করছে। বলল কি খোঁজ মিলল ? দু’টো ইন্ডিয়ান ছেলে মেয়ে আছে সকালে দেখা করতে বলল। রাতটা ভগবানের নাম জপতপ করলাম। ভগবান মিলিয়ে দাও, তাকে ডাকলাম। তখন সুশান্ত সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ হয়নি। ক্যামেলিয়া দেবপ্রিয়কে নিয়ে মোটেলে ফিরে আসেনি। ভোর হলো ব্রেক ফাস্ট শেষ করে আমি আকাশ আবার হাসপাতালে কচ দোলার ওখানে গেলাম, দেখি– নার্স আমাকে ও আকাশকে নিয়ে ওদের রুমে ঢুকল। কচ আমাকে দেখে চিনল দাদু করে ডাকছিল। কিন্তু দোলার চোখে ব্যান্ডেজ। গালের দু’পাশে ব্যান্ডেজ থাকাতে আমাকে দেখতে পেলনা। আমার গলার আওয়াজ শুনে দোলা কেমন অস্থিরতা প্রকাশ করল। আমি ডাক্তারকে বললাম, আমার নাতনী (গ্রান্ড ডটার) সমুদ্রের কুলে বেড়াতে গিয়ে হিং¯্র জন্তুর আক্রমনে পরে। আমরা কানাডা থেকে মায়ামি সিবিচ দেখতে এসেছিলাম। ডাক্তার সব শুনল, ওদেরও জিজ্ঞাসা করল আমি যা বলেছি ওরাও তাই বলল। আমি দোলার কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত দিয়ে বুলাতে লাগলাম। ও আমার হাতের পরে ওর হাত রাখল। কচ বলল, দাদু গাড়ী নিয়ে এসেছেন ? আমরা যাব, দোলার কথা ডাক্তার বলল, ওনার মুখের ঘা, চোখের পাতার উপর হিং¯্র জন্তুর থাবা ভীষণ আকার ধারণ করেছিল। এখনত এন্টিবায়েটিক ইনজেকশনের কল্যাণে নার্সদের শুশ্রুশায় অনেক আরোগ্যের পথে।

(চলবে——–)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।