ভোলায় অব্যবস্থাপনায় শুরু বিজ্ঞান মেলা

রোববার সকাল ১১টায় ভোলা সদর উপজেলার টাউন কমিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলা। সেই অনুযায়ী ভোলা সদর উপজেলা ছাড়াও বেশ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসেছেন মেলার মাঠে। কিন্তু মেলা প্রাঙ্গনে এসে তারা জানতে পারেন রোববার সকালে নয়, উদ্বোধন হবে বিকেলে। ফলে মেলায় অংশগ্রহণকারী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা সকাল থেকে অপেক্ষা করছে কখন উদ্বোধন হবে মেলা।
এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিজ্ঞান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম মেস্তফা কামাল অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে রোববার সকাল ১১টায় মেলার উদ্বোধন করা হবে। অথচ সকালে মেলা প্রাঙ্গনে এসে জানতে পারি যে, সকাল নয় বিকেলে উদ্বোধন হবে। তিনি আরও বলেন, সময় পরিবর্তন করা হলেও আমাদেরকে কেউ সেটা জানায়নি। ব্যবস্থা করা হয়নি দুপুরের কোন খাবারেরও। ফলে নিজেদের টাকা দিয়েই মাঠের কাছাকাছি একটি রেষ্টুরেন্টে ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছি। সেই মেলা উদ্বোধন করা হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার ক্ষুদে বিজ্ঞানী ও ওই উপজেলার বিজ্ঞান ক্লাবের সদস্য লাবিব বলেন, আমরা সকাল থেকে মেলায় এসে উদ্বোধনের অপেক্ষা করেছি। দুপুরের খাবারও খেতে হয়েছে রেস্টুরেন্টে। একইভাবে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদুর রহমান পিন্টু বলেন, সকালে মেলার উদ্বোধনের খবরে বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে মাইক্রোবাসে করে স্কুলের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে ভোলা সদরের বিজ্ঞান মেলায় এসেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন খাবারের ব্যবস্থা না করায় বাধ্য হয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছি রেস্টুরেন্টে।
সরেজমিনে সকাল থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার টাউন কমিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান করে দেখা গেছে মেলায় ২৬টি স্টল থাকলেও অধিকাংশ স্টলগুলো ছিল ফাঁকা। ছিলনা কোন দর্শনার্থী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে তখনও কাজ চলছে মঞ্চ তৈরীর। তবে, এর জন্য সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেছেন অনেকেই। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধনের সময় পরিবর্তনের বিসয়টি উদযাপন কমিটির অনেক সদস্যরাই জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উদযাপন কমিটির অন্যতম সদস্য অমিতাভ অপু বলেন, সমন্বয়হীনতার কারনে অনেকটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে। কমিটির আরেক সদস্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাদব কুমার মন্ডল বলেন, আমি ওই কমিটির শুধু একজন সদস্য। ডিসি স্যারই সব করেছেন। আর শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিকী একজন বিচারক। জানতে চাওয়া হলে এ ব্যাপারে নুরে আলম সিদ্দিকী কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), (শিক্ষা ও আইসিটি) মামুন আল ফারুক বলেন, সকালে মেলার উদ্বোধন হাওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারনে সেটি বিকেলে উদ্বোধন করা হয়েছে। পরিবর্তীত সময় সবাইকে জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমোহনে এমপির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জেলা প্রশাসকসহ জেলা প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাই সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে মেলায় আসা অংশগ্রহণকারীরা। ৬ মার্চ থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। মেলায় ২৬টি স্টল রয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।