সর্বশেষঃ

ভ্রমন কন্যা এলিজা বিনতে এলাহীর মনপুরা ভ্রমন

দেশের বৃহত্তম উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্যের সী-বিচ আর হরিণের চারনভুমি খ্যাত রূপালী দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় ভ্রমনে এসেছেন ভ্রমন কন্যা এলিজা বিনতে এলাহী। তিনি ঢাকা থেকে ১২ নভেম্বর শুক্রবার মনপুরা ভ্রমনে আসেন। ভোলার অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র মনপুরার দক্ষিণা হাওয়া সী-বিচ, আনন্দবাজার ব্রীজ, তুলাতলি পয়েন্ট, মাছের বাজার ও হাজির হাট জেটি ভ্রমনের পাশাপাশি এলিজা বিনতে এলাহী সেখানকার পুরানো স্কুল গুলোও পরিদর্শন করেছেন। ১৯০৪ ও ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখেন। মনপুরা উপজেলার প্রথম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও পরিদর্শন করেন তিনি। এটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত।

ভ্রমন কন্যা এলিজা বিনতে এলাহী শনিবার দুপুরে ভোলার বাণী কে জানান, তিনি ইতিপূর্বে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলাসহ দেশের ৬৪ জেলাতেই ভ্রমন শেষ করেছেন। নতুন করে আবার জেলার বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন এলাকা এবং প্রত্মতাত্বিক স্থাপনাগুলো দেখার জন্য ভ্রমনে বের হয়েছেন। সেই লক্ষ্যে তিনি গত শুক্রবার সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র মনপুরা দ্বীপে প্রথম ভ্রমনে আসেন। এখানকার পর্যটনকেন্দ্র ও পুরনো স্কুলগুলো পরিদর্শন শেষে শনিবার বিকেলের লঞ্চে উঠে ঢাকা চলে যান। মনপুরা ভ্রমন আপনার কাছে কেমন লেগেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে এলিজা বিনতে এলাহী বলেন, মনপুরার দ্বীপের রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও মনপুরার ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বিদেশি পর্যটক ও বণিকদের আগ্রহ মনপুরার প্রতি ছিল সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই। তখন অবশ্য এই দ্বীপের নাম মনপুরা ছিল না। যতটুকু জেনেছি, ষোড়শ শতকে ভোলা ও মনপুরা সহ কয়েকটি দ্বীপ চন্দ্রদ্বীপ ও বাকলা জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল। চন্দ্রদ্বীপ ও বাকলা দুটোই বৃহত্তর বরিশালের প্রাচীন নাম। ভারথেমা, লি-ব্লাংক, সিজার ফ্রেডরিক, মনরিখ এই দ্বীপ ভ্রমণ করেছেন এবং ভ্রমনকাহিনীও লিপিবদ্ধ করেছেন। মনরিখের বর্ননায় দক্ষিন শাহবাজপুর (বর্তমানের ভোলা) ছাড়াও, আরও একটি দ্বীপের কথা জানা যায়।

সেই দ্বীপ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এই দ্বীপ শস্যের জন্য দারুন উর্বর। গবেষকরা সেই দ্বীপকেই মনপুরা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। সেখানকার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তার অভাব বোধ করিনি। মাছের রাজ্যে, তাজা মাছ দিয়ে দুই বেলা খাবার খেতে দারুন লেগেছে। পর্যটিন কেন্দ্র গুলোতে যাবার জন্য বাহন রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। শহরের মধ্যে ঘুরে বেড়াবার জন্য ইজি বাইক, মোটর বাইক নিয়ে ঘোরা যায়। আর একটি দ্বীপের জনপদে কিছুটা অপ্রতুলতা থাকবে, এই অপ্রতুলতাই এর অলংকার। আমি অবাক হয়েছি শিক্ষা ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে। এখানকার প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনকাল ১৯০৫ সাল। এই জনপদকে আমি অনগ্রসর বলতে রাজি না। আমি বলবো শুধু দেশী পর্যটক নয়, বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করাবার সূযোগ রয়েছে মনপুরায় প্রচার প্রসারনা ও ডিজিটালাইজেশনকে পুরোপুরি ব্যবহার করার মাধ্যমে। ভ্রমন কন্যা বলেন, পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে এই এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সম্ভব, নতুন তরুন উগ্যোতা সৃষ্টি সম্ভব এবং এই দ্বীপে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরী করা সম্ভব। পর্যটকদের থাকবার জন্য ভালো মানের হোটেল প্র‍য়োজন, দক্ষ গাইড প্রয়োজন ও খাবারের হোটেল প্রয়োজন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।