বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার বেতুয়া-মনপুরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
এই অঞ্চলের সরকারগুলির প্রতি ১৮ টি মানবিক সংস্থার আহবান
বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরে আটকা পড়া শরণার্থী এবং আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বাঁচান
সমুদ্রে আটকা পড়া শরণার্থী এবং আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বাঁচাতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার জন্য বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগর অঞ্চলের দেশগুলিকে আহবান জানিয়েছে ১৮ টি মানবিক সংস্থা। তারা এই আটকে পড়াদের তীরে অবতরণ করার অনুমতি দেওয়া এবং পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদানেরও অনুরোধ জানায়। একটি যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে সংস্থাগুলো এই অঞ্চলের সরকারগুলোকে সমস্যাটি সমাধানের জন্য জরুরিভাবে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানায়। সংবাদ বিবৃতিতে স্বাক্ষরদানকারী সংস্থাগুলি হলো এ্যাকশন কন্ট্রি লা ফেইম, এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্ক, এশিয়ান ডিগনিটি ইনিশিয়েটিভ, কেয়ার, চাইল্ডফান্ড ইন্টারন্যাশনাল, কোস্ট ট্রাস্ট, ডেনিশ রিফিউজি কাউন্সিল, হিউম্যিানিটি এন্ড ইনক্লুশন, আইএসডিই বাংলাদেশ, মেডিসিনস ডু মোন্ডি ফ্রান্স, ম্যাডেসিনস ডু মোন্ডি সুইজারল্যান্ড, মুক্তি কক্সবাজার, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল, অক্সফাম, পালস, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দ্যা ইন্টারন্যাশনাল এবং সলিডারিটসের ইন্টারন্যাশনাল।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে কয়েকশ রোহিঙ্গা শরণার্থী সমুদ্রে আটকে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সম্প্রতি ৪০০ শরণার্থীকে তাদের তীরে নামার অনুমতি দিয়েছে। তবে, বর্তমান কোভিড -১৯ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে এই অঞ্চলের অন্যান্য সরকারগুলি শরণার্থীদের অবতরণ করার অনুমতি দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। শরণার্থী বোঝাই কমপক্ষে দুটি নৌকাকে অবতরণ করতে দেওয়া হয়নি, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যকার সমুদ্রের দিকে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, কোবিড-১৯ এই আশ্রয়প্রার্থীদের তীরে আশ্রয় না দেওয়ার কোনও অজুহাত হতে পারে না এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, মানবিক, শরণার্থী এবং সামুদ্রিক আইন অনুসারে দেশগুলো এই বিষয়ে তাদের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারে না। লোকজনকে সমুদ্রে ঠেলে দেওয়া পুনর্বাসন সংক্রানস্ত নীতি লঙ্ঘন করে, যে নীতি অনুযায়ী নির্যাতন বা অন্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে থাকা কাউকে এই অঞ্চলের দেশগুলো এভাবে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করতে পারে না। সমুদ্রে ভাসমান নৌকাগুলোকে তীরে আসতে বাধা দেওয়ার ফলে সমুদ্রেই বেশ কিছু লোকের মৃত্যু হতে পারে।
মানবিক সংস্থাগুলি জানায়, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশ সকলেই Bali Process on People Smuggling, Trafficking in Persons and Related Transnational Crime এর সদস্য, যা এই ধরনের আশ্রয়প্রার্থীদেরকে তীরে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও সমন্বিত উদ্যোগকে উৎসাহিত করে। ২০২০ সালের ফেব্রয়ারিতে, Bail Process’s Task Force on Planning and Preparedness অনিয়মিত এর সদস্য, যা এই ধরনের আশ্রয়প্রার্থীদেরকে তীরে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও সমন্বিত উদ্যোগকে উৎসাহিত করে। ২০২০ সালের ফেব্রয়ারিতে, Bail Process’s Task Force on Planning and Preparedness সমুদ্র অভিবাসন সম্পর্কিত জীবন বাঁচানো এবং আশ্রয়প্রার্থীদেরকে জোর করে ফিরিয়ে না দেওয়ার নীতিটির পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যাক্ত করে। বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যেও পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া বিপন্ন মানুষজনদের দুর্দশার সমাধানে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।
সংবাদ বিবৃতিতে মিয়ানমার সরকারকে Rakhine Advisory committee এর সুপারিশ বাস্তবায়নসহ সমুদ্রপথে বিপজ্জনক ভ্রমণে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করতে দায়ী কারণগুলোর অবিলম্বে সমাধানের জন্যও আহ্বান জানানো হয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ প্রত্যেককে বৈষম্যহীন নাগরিকত্ব প্রদান নিশ্চিত করা এবং মানবিক সহায়তা, চলাচলের স্বাধীনতা এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগু পাওয়াসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্যোগ নিতেও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। বিবৃতিতে এই অঞ্চলের সমস্ত সরকারকে জীবন বাঁচাতে এবং বিপন্ন মানুষের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, সরকারগুলি অবশ্যই শরণার্থী এবং আশ্রয় প্রার্থীদের সুরক্ষা এবং প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করবে। সম্ভব হলে তাদের অধিকার সমুন্নত রেখে এবং মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে তাদেরকে কোয়ারান্টিনে রাখা যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে মানবিক বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকারগুলোকে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া পরিবারগুলির পুনর্মিলনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
বার্তা প্রেরক : রেজাউল করিম চৌধুরী (০১৭১১৫২৯৭৯২), মোস্তফা কামাল আকন্দ (০১৭১১৪৫৫৫৯১